না— আপনাকে আজ খেয়ে যেতে হবে। আপনার সঙ্গে একটা কাজের কথা আছে।”
সতীশ লাফাইয়া উঠিয়া বিনয়ের হাত ধরিল এবং কহিল, “হাঁ মা, বিনয়বাবুকে যেতে দিয়ো না, উনি আজ রাত্রে আমার সঙ্গে থাকবেন।”
বিনয় কিছু কুণ্ঠিত হইয়া উত্তর দিতে পারিতেছিল না দেখিয়া বরদাসুন্দরী গোরাকে কহিলেন, “বিনয়বাবুকে কি আপনি নিয়ে যেতে চান? ওঁকে আপনার দরকার আছে?”
গোরা কহিল, “কিছু না। বিনয় তুমি থাকো-না— আমি আসছি।”
বলিয়া গোরা দ্রুতপদে চলিয়া গেল।
বিনয়ের থাকা সম্বন্ধে বরদাসুন্দরী যখনই গোরার সম্মতি লইলেন সেই মুহূর্তেই বিনয় ললিতার মুখের দিকে না চাহিয়া থাকিতে পারিল না। ললিতা মুখ টিপিয়া হাসিয়া মুখ ফিরাইল।
ললিতার এই ছোটোখাটো হাসি-বিদ্রূপের সঙ্গে বিনয় ঝগড়া করিতেও পারে না, অথচ ইহা তাহাকে কাঁটার মতো বেঁধে। বিনয় ঘরে আসিয়া বসিতেই ললিতা কহিল, “বিনয়বাবু, আজ আপনি পালালেই ভালো করতেন।”
বিনয় কহিল, “কেন?”
ললিতা। মা আপনাকে বিপদে ফেলবার মতলব করছেন। ম্যাজিস্ট্রেটের মেলায় যে অভিনয় হবে তাতে একজন লোক কম পড়ছে— মা আপনাকে ঠিক করেছেন।
বিনয় ব্যস্ত হইয়া কহিল, “কী সর্বনাশ! এ কাজ আমার দ্বারা হবে না।”
ললিতা হাসিয়া কহিল, “সে আমি মাকে আগেই বলেছি। এ অভিনয়ে আপনার বন্ধু কখনোই আপনাকে যোগ দিতে দেবেন না।”
বিনয় খোঁচা খাইয়া কহিল, “বন্ধুর কথা রেখে দিন। আমি সাত জন্মে