শান্ত পথিকসঞ্চরা, নীরব বিহঙ্গ কলকাকলী, ক্কচিৎ শিবা-রুত মন্দ্রিতা, ক্কচিৎ “ভোদা”-কুকুর-ক্রন্দিতা নিশীথিনীতে। কলু ঘানিতে গোরু জুড়ে দিয়ে যখন তেল বের করে তখন তার চোখে ঠুলি দিয়ে দেয়— সেই ঠুলিতে অন্ধ হয়ে সে বিশ্বে নিজেকে ছাড়া আর কিছুকেই উপলব্ধি করতে পারে না— তখন সে নিজেকে নিয়ে কেবলি ঘুরতে থাকে আর কলু আদায় করে নেয় কেবলি খাটিয়ে মারেন— নইলে তার কাজ চলে না। চিঠি লিখচিত চিঠিই লিখচি! কেনরে বাপু হয়েচে কি? অহঙ্কার! আচ্ছা না হয় অল্প একটুখানি লিখে শুতে যাও না— জো কি ! বড় চিঠি লিখলে কেউ একজন খুসি হবে! অহঙ্কার, অহঙ্কার!— এত বড় নিঃসংশয়ে তুমি জানলে কি করে যে সে খুসি হবে? অহঙ্কার, অহঙ্কার! আমার চিঠির অপেক্ষায় ডাক-হরকরার পদধ্বনি গণনা করচে না, একি হতে পারে? অহঙ্কার, অহঙ্কার । নিশ্চয়ই সে “সচকিতনয়নং পশ্যতি পেয়াদা-পন্থনং”— অতএব লেখ, লেখ, থাক নিদ্রা, থাকৃ আরাম। মায়া দিয়ে মায়ার জগতের বিস্তার হতে থাকে ; ভালো করে কিছুই জানি নে, কিছুই বুঝতে পারিনে ; আন্দাজের গোধূলির আলোতে কতই যে জাল বুনচি, আর সেই জালে ঘুরে ফিরে নিজেকে জড়াচ্চি। উজ্জ্বল আলোতে সুস্পষ্ট করে সব কিছু দেখতে পেলে মানুষ অনেক স্বকপোল কল্পিত অনাবশ্যক তাগিদের হাত থেকে নিস্কৃতি পেতে পারে— তখন বিশ্বশতদলের ঠিক যেখানটাতে মধুকোষ সেখানে পথ পেতে তার বিলম্ব হতে পারে না— আর তার পরে সে আপনার অহঙ্কার ভুলে সব ভুলে সেই সুধারসের মূল কেন্দ্রে গিয়ে প্রতিষ্ঠা লাভ করে, শাস্ত হয়, কৃতার্থ হয় – এই দেখ, কি কাণ্ড ! হাস্যরসের চঞ্চল স্রোত বেয়ে হঠাৎ তত্ত্বজ্ঞানের গম্ভীর গুহার মধ্যে প্রবেশ করবার উপক্রম করেচি। রাত্রে চিঠি লেখার ঐ ত দোষ! রাত্রিচর পার্থীরা গম্ভীর পার্থী, তারা গান গায় না, সে ত জান। ૨8૭