বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:চিঠিপত্র (অষ্টাদশ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রায় একমাস ছিলেন— পশুদিন তিনি চলে গেছেন। গেল বুধবারে* সকালে আমি মন্দিরে কি বলেছিলুম শুনবে ? আমি বলেছিলুম, মানুষের ছোট আর বড়, দুই আছে। সেই ছোট মানুষটি জন্ম আর মৃত্যুর মাঝখানে কয়দিনের জন্যে আপনার একটি ছোট সংসার পেতেছে— সেইখানে তার যত খেলার পুতুল সাজানো— সেইখানে তার প্রতিদিনের আহরণ জমা হচ্চে আর ক্ষয় হচ্চে। কিন্তু মানুষের ভিতরকার বড়টি জন্মমৃত্যুর বেড়া ডিঙিয়ে চিরদিনের পথে চলেছে— এই চলবার পথে তার কত সুখ দুঃখ, কত লাভ ক্ষতি ঝরে পড়ে মিলিয়ে যাচ্চে। পৃথিবীর দুটি আবৰ্ত্তন আছে ; একটি আহিক যি], একটি বার্ষিক, একটি আবৰ্ত্তনে সে আপনাকেই ঘুরচে, আর একটিতে সে নিজের চিরপথের কেন্দ্রস্থিত আলোকের উৎসকে প্রদক্ষিণ করচে। নিজেকে ঘোরবার সময় সূর্যের দিকে পিঠ ফেরাতেই দেখতে পায় যে, তার নিজের কোনো আলো নেই, তার নিজের দিকে অন্ধতা, ভয়, জড়তা। কিন্তু নিজের সেই অন্ধকারটুকুকে না জানলে সূর্যের সঙ্গে তার সম্বন্ধের পূর্ণ পরিচয় সে পেত না। আমরাও আমাদের ছোট আবৰ্ত্তনে নিজেকে ঘুরি— এ ঘোরাতেই ক্ষুদ্রতা— কিন্তু সেই জানার সঙ্গে সঙ্গেই যখন সেই অমৃতের উৎসকে জানি, তখন অসত্য থেকে সত্যে, অন্ধকার থেকে আলোকে, মৃত্যু থেকে অমৃতে আমরা যেতে থাকি— এই জন্যে আপনাকে আর তাকে দুইকেই করতে করতে মুক্তির স্বাদ পেতে পেতে অমৃতের পাথেয় সংগ্রহ করতে করতে চিরদিনের পথে চলতে পারি। আমাদের ক্ষুদ্র প্রতিদিন আমাদের বৃহৎ চিরদিনকে প্রণাম করতে করতে চলতে থাকবে— আমাদের ক্ষুদ্র প্রতিদিন তার সমস্ত আহরণগুলিকে বৃহৎ চিরদিনের চরণে সমর্পণ করতে করতে চলবে। কিন্তু ক্ষুদ্র প্রতিদিন যদি এমন কথা বলে বসে যে, আমি ዓሌbr