পাতা:চিঠিপত্র (চতুর্থ খণ্ড)-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

98 ল গুল জন ১৯২৫ মীর ক’দিন থেকে কেবলি তোর কথা মনে হচ্চে। ভাবচি হয়ত তুই কষ্ট পাচ্চিস । আমাকে যদি কেউ কলকাতার বাড়ির খাচায় পূরে রাখত আমার কি অসহ্য কষ্ট হত সে ত বুঝতে পারি। এমন কি এখানকার এই মেঘাচ্ছন্ন আকাশ এবং লণ্ডনের ভিড় আমাকে যেন চেপে মরচে । প্রতিদিনই দেশে ফেরবার জন্যে চিত্ত ব্যথিত হয়ে উঠচে । বোলপুরের আকাশ আলোক মাঠ সেখানকার স্বাধীনতা তোর পক্ষে কতখানি সেত আমি জানি । কিন্তু জগতে যত জীবজন্তু আছে সব চেয়ে পরাধীন মানুষ। কেননা মানুষ স্বাধীনতার মূল্য জানে অথচ পদে পদে তার থেকে বঞ্চিত । বিশেষত মেয়েদের কথা যখন ভাবি তখন মন বিদ্রোহী হয়ে ওঠে । আমরা পুরুষ, কত যুগ থেকে মেয়েদের জেলখানার দারোগাগিরি করে আস্চি— এর নিষ্ঠুরতা যে কতদূর যেতে পারে তা কল্পনা করবার শক্তি পৰ্য্যন্ত হারিয়েচি । আমার জীবনে সব চেয়ে বড় তুঃখ এই যে আমি তোকে সুখী করতে পারলুম না। আমার এইটুকুমাত্র আশা ছিল যে তোকে বোলপুরে ফাকায় রাখতে পারব।