পাতা:ছিন্নমুকুল - স্বর্ণকুমারী দেবী.pdf/৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বাদশ পরিচ্ছেদ
৫৫

 প্র। আজ হঠাৎ নীরজার পিতার সঙ্গে সাক্ষাৎ।

 যামিনী। নীরজার পিতা! তিনি এখানে এসেছেন?

 প্র। হ্যাঁ, কিন্তু নীরজা এখানে তাত আমি জানতেম না, তাতে বড়ই ক্ষতি হয়েছে।

 নীরজাকে প্রমোদ দেখিতে পাইয়াছেন দেখিয়া যামিনীনাথ হাসিয়া এই কথার মধ্যে বলিলেন, “দেখ ভাই প্রমোদ, নীরজাকে নিয়ে মহা ব্যাপার হয়েছিল, সে অনেক কথা। সে সব তোমাকে বলবার জন্যে আমি খুবই ব্যগ্র হ’য়ে আছি। কবে এলাহাবাদ থেকে এসেছ সে খবরটাও কি দিতে নেই?”

 প্র। কেমন ঘটে ওঠে নি, অন্যায় হয়েছে স্বীকার করি। আমি নীরজার মুখে সে সব ব্যাপার এই মাত্র সবিশেষ শুনলেম, কি ভয়ানক। যামিনি, তুমি না বাঁচালে নীরজার কি দুর্দ্দশা হোত মনে করতেও—”

 যা। এখন ভালয় ভালায় তার বাপের হাতে তাকে দিতে পারলে হয়। এখানে যে সন্ন্যাসী এসেছেন ভালই হয়েছে। আমি যে কত চিঠিই তাঁকে লিখেছি ঠিক নেই, কাজে ব্যস্ত না থাকলে, নিজে গিয়ে এতদিন নীরজাকে কানপুরে রেখে পর্য্যন্ত আসতেম। যাক, তার পর সন্ন্যাসী তোমাকে কি বল্লেন?”

 প্রমােদের সহিত সন্ন্যাসীর যে কথা হইয়াছিল প্রমােদ সংক্ষেপে সে সকল বলিয়া কহিলেন “সন্ন্যাসী আমাকে কোন মতে বিশ্বাস করিলেন না, আমার মনে হচ্ছে দস্যুদের বৃত্তান্ত শুনলেও আমাকেই দোষী ভাববেন।”—

 যামিনীনাথ হাসিয়া বলিলেন “তুমি নির্দ্দোষী, তােমার ভয় কি, আমি আছি, তুমি নিশ্চিন্ত থাক।”

 প্রমােদ বলি, “সন্ন্যাসী যদি নালিস করেন বিচারে যে আমি নির্দ্দোষ হব সে বিষয়ে আমার সন্দেহ নাই, সেজন্য ভাবি না। কিন্তু