বৃদ্ধ বললেন——আজ দু’জনে বুঝি স্কুল কলেজ কামাই ক’রে ব’সে আছ? যা, ও ঘরে যা—হরিদাসকে বলে রাখ্ গাড়ির কথা। আমার এর পরে মনে থাকবে না।
তরুণী দুটি চলে যেতেই বৃদ্ধ বললেন—আমার মেজ মেয়ের মেয়ে—বাগবাজারে আমার মেজ মেয়ের শ্বশুরবাড়ি। গোরাচাঁদ মল্লিকের নাম শুনেচেন তো? ওই তাদেরই বাড়ি। বনেদী বংশ—গোরাচাঁদ মল্লিক ছিলেন আমার মেয়ের শ্বশুরের···এই যে ভূধর! এসো, এসো বাবা—ব’সো।
এবার আরও গুরুতর ব্যাপার। যাঁকে সম্বোধন করা হ’ল এবং যাঁর নাম ভূধর তাঁর বয়স পঞ্চাশ থেকে পঞ্চান্ন। তিনি স্থূলকায় হ’লেও সঙ্গের মহিলাটির তুলনার তিনি নিতান্ত কৃশ। এঁদের স্বামী-স্ত্রীর পেছনে চার পাশ ঘিরে ছ’ সাতটি ছেলেমেয়ে। এদের বয়েস দশ থেকে ঊনিশের মধ্যে—আর একটি কুড়ি বাইশ বছরের মেয়ে একটু পিছিয়ে ছিল—তার কোলে একটি শিশু কিন্তু এ পর্যন্ত যে কয়টি মেয়ে এখানে দেখলুম, তার মধ্যে এই মেয়েটিই সর্বাপেক্ষা সুন্দরী।
বৃদ্ধ তার দিকে চেয়ে বললেন— এই যে মৃণাল, পিছিয়ে কেন—আয় আয়, খোকাকে দেখি, দে একবার ভাই আমার কোলে। নিশীথ এল না?
আমার অবস্থা শোচনীয় হ’য়ে উঠেছে। ছোট ঘরে যে ফাঁকা জায়গাটুকু ছিল স্বামী-স্ত্রী তার অনেকটা অংশ জুড়ে দাঁড়িয়েছেন। বাকিটা জুড়েছে ছেলেমেয়ের দল—পেছনের মেয়েটির জন্যে তেমন জায়গা নেই, আমি সঙ্কুচিত অবস্থায় চেয়ার যতদূর সম্ভব পিছিয়ে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে দেওয়ালের সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছি। জড় পদার্থকে আর সঙ্কুচিত করা সম্ভব নয়। অথচ এই ভিড়ের