পাতা:জন্মভূমি (সপ্তদশ বর্ষ).pdf/৪২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

OSIR নবীনচন্ত্রের জীবনী । , ১৭শ বর্ষ । “আমার জীবনে’ লিখিয়াছিলেন, যে র্তাহার জীবনে যাহা কিছু ভাল তাহ বহুল পরিমাণে চন্দ্ৰকুমার বাবুর রচনা । এফ, এ, পরীক্ষার একমাস পুবে তাহার বিবাহ হয়। এই “অদ্ভুত বিবাহ ব্যাপার’ কিরূপে সংঘটিত হইয়াছিল, নবীনচন্দ্ৰ তাহার আত্মজীবনীতে তাহার বিস্তৃতবিবরণ দিয়াছেন। বি, এ, পরীক্ষার কিছুদিন পুবে পিতৃবিয়োগ ঘটে। অর্থের অনটনে প্ৰপীড়িত হইয়া নবীনচন্দ্ৰ সেই বিপন্নের বন্ধু, আৰ্ত্তের সহায়, বিদ্যাসাগর মহাশয়ের শরণাপন্ন হয়েন। যে মহাপুরুষের দয়ারসাগরের বারিসিঞ্চনে একদিন বঙ্গের অদ্বিতীয় কবি মধুসুদন সমূহ বিপদ হইতে পরিত্রাণ পাইয়াছিলেন, নবীনচন্দ্র তাহার স্নেহ ও করুণা হইতে বঞ্চিত হ’ন নাই । প্রেসিডেন্সি কলেজে পঠদ্দশ কালে কবিবর ‘বিধবাকামিনী’ রচনা করেন ; এবং ইহার কিছুদিন পরে ‘পিতৃহীন যুবা” রচিত হয়। এই দুইটী কবিতা এইসময়ে ‘এডুকেশন গেজেটে প্রকাশিত হয়। শ্ৰীযুক্ত কৃষ্ণকমল ভট্টাচাৰ্য প্রভৃতি সুযোগ্য সমালোচকগণ এই দুইটী কবিতার যথেষ্ট প্রশংসা করেন। “পিতৃহীন যুবকের।” প্ৰথমবার অষ্টশ্লোক মাত্ৰ প্ৰকাশিত হয়। এরূপ কবিতা খণ্ড খণ্ড করিয়া সংবাদ পত্ৰে প্ৰকাশ করা অপেক্ষা পুস্তকাকারে প্রকাশ করিলে ভাল হয়-কৃষ্ণকমল বাবু গ্ৰন্থকারের কতিপয় বন্ধুর নিকট এইরূপ অভিমত প্ৰকাশ করেন। তাহাতেই ‘অবকাশরঞ্জিনী” আকুরিত হয়। ১৮৬৮ খৃঃ প্রতিযোগী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া নবীনচন্দ্ৰ ডেপুটী ম্যাজিষ্ট্রেটের পদে নিযুক্ত হন। তিনি বহু মহকুমায় বিশেষ দক্ষতার সহিত রাজকাৰ্য্য নিববাহ করেন। রাজকাৰ্য্যে নিয়োজিত হইয়া তিনি যে যে মহকুমায় অবস্থান করিয়াছিলেন, সেই সকল স্থানেই জনসাধারণের বিশেষ শ্ৰীতি ও প্ৰশংসাভাজন হইয়াছিলেন। তাহার উন্নত ও স্বাধীন চরিত্র হেতুক রাজপদ ভঁাহার পক্ষে কুসুম শয্যা হয় নাই। ১৯০৫ খৃষ্ট রাজকাৰ্য হইতে অবসর গ্ৰহণ করিয়া শেষ জীবন তাহার। চট্টগ্রামস্থিত৷ “লক্ষ্মীভিলা” কুটীরে অতিবাহিত করেন। তঁহার শেষজীবনের ফল দুইখানি পুস্তক-অমৃতাভ (শ্ৰীশ্ৰীচৈতন্যদেবের লীলা ) ও আমার জীবন ( গ্ৰন্থকারের আত্মজীবনী-পাঁচখণ্ডে সমাপ্ত ) “আমার জীবনের মাত্র দুইখণ্ড প্ৰকাশিত হইয়াছে ; অবশিষ্ট তিনখণ্ড ও অমৃতাভ এখন যন্ত্রন্থ। ১৩১৫ সালের মাঘমাসে নবীনচন্দ্ৰ পত্নী ‘লক্ষ্মীদেবী’ও একমাত্র পুত্ৰ রাখিয়া পরলোক গমন করেন। তঁহার নশ্বর জড়দেহ পৃথিবী হইতে অন্তহিত হইল বটে, কিন্তু তিনি আজ কি এক অময়, দিব্য জ্যোতিৰ্ম্ময় দেহে বঙ্গবাসীর হৃদয়ের রন্ধে, রন্ধে, বিরাজ করিতেছেন।