У o 8 প্ৰথম নিপাঠ পাঠাইয়া দিত; জ্যেষ্ঠ ও কনিষ্ঠ সহােদরকে ধরিলে জ্যেষ্ঠকে পাঠাইয়া দিতা ; আচাৰ্য্য ও শিষ্যকে ধরিলে শিষ্যকে পাঠাইয়া দিত । প্রেষণকেরা ব্ৰাহ্মণ ও বোধিসত্ত্বকে ধরিয়া ফেলিল এবং সম্প্রদায়ের প্রথানুসারে ব্ৰাহ্মণকে আবদ্ধ রাখিয়া বোধিসত্ত্বকে নিশ্রুয়া আহরণ কিরিবার জন্য ছাড়িয়া দিল । বোধিসত্ত্ব আচাৰ্য্যকে প্ৰণাম কন্ধুি বলিলেন, “আমি দুই এক দিনের মধ্যে নিশ্চিত ফিরিয়া আসিব। আমি যেরূপ বলিতেছি, যদি সেইরূপে চলেন, তাহা হইলে আপনার কোন ভয়ের কারণ নাই। অদ্য রত্ন-বর্ষণের যোগ আছে; সাবধান! বিপদে অভিভূত হইয়া যেন মন্ত্রপাঠ-পূর্বক রত্নবর্ষণ না ঘটান। রত্নবর্ষণ করাইলে আপনার এবং এই পঞ্চশত দমুয্যর বিনাশ হইবে।” আচাৰ্য্যকে এইরূপে সতর্ক করিয়া বোধিসত্ত্ব নিশুক্রয় সংগ্ৰহ করিবার জন্য প্ৰস্থান করিলেন। , সন্ধ্যাকালে দনু্যরা ব্ৰাহ্মণকে বন্ধন করিয়া ফেলিয়া রাখিল। এ দিকে ক্ষিতিজের প্রাচীমূলে পূৰ্ণচন্দ্ৰ উদিত হইল। ব্ৰাহ্মণ নক্ষত্ৰ দেখিয়া বুঝিলেন, মহাযোগ উপস্থিত হইয়াছে। তখন তিনি ভাবিলেন, “বৃথা এত বিড়ম্বন ভোগ করি কেন ? মন্ত্রপাঠ-পূর্বক রত্নবর্ষণ করাইয়া দসু্যাদিগকে নিশুক্রয় দান করা যাউক ; তাঢ় হইলে, যেখানে ইচ্ছা স্বাধীনভাবে যাইতে পারিব।” এইরূপ চিন্তা করিয়া তিনি দাসুয়াদিগকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “তোমরা আমায় আবদ্ধ করিয়াছ কেন হে ?” তাহারা বলিল, “মহাশয়, আমরা ধন পাইবার নিমিত্ত আপনাকে আবদ্ধ করিয়াছি।” “যদি ধন লাভই তোমাদের উদ্দেশ্য হয়, তাহা হইলে এখনই বন্ধন খুলিয়া আমাকে স্নান করাও এবং নব বস্ত্র পরিধান করাইয়া, গন্ধদ্বারা অনুলিপ্ত করিয়া ও পুষ্পদ্বারা ভূষিত করিয়া একাকী অবস্থান করিতে দাও।” দস্যরা এই কথা শুনিয়া তদনুরূপ কাৰ্য্য করিল। ব্ৰাহ্মণ নক্ষত্ৰযোগ সমাগত জানিয়া মন্ত্রপাঠ্যপূর্বক আকাশের দিকে তাকাইলেন, অমনি রাশি রাশি রত্নবৃষ্টি হইল। দসু্যরা তাহা সংগ্রহপূর্বক স্বীয় উত্তরীয়-বস্ত্ৰে পুটুলি বাধিয়া যাত্ৰা করিল। ব্ৰাহ্মণও তাহদের অনুসরণ করিলেন । কিন্তু অদৃষ্টের কি বিচিত্ৰ খেলা ! কিয়ৎক্ষণ পরে অন্য পঞ্চশত দম্য আসিয়া প্রেষণকদিগকে ধরিয়া ফেলিল। প্রেষণকেরা জিজ্ঞাসা করিল, “তোমরা আমাদিগকে আবদ্ধ করিলে কেন ?” তাহারা বলিল “ধন পাইবার জন্য”। “যদি ধন পাইতে চাও, তবে এই ব্ৰাহ্মণকে ধর। ইনি আকাশের দিকে তাকাইলেই রত্নবৃষ্টি হয়। আমাদের নিকট যে ধন আছে, তাহা ইনিই দিয়াছেন।” ইহা শুনিয়া দ্বিতীয় দামু্যদল প্রেষণাকদিগকে ছাড়িয়া ব্ৰাহ্মণকে ধরিল এবং বলিল, “আমাদিগকে ধন দাও।” ব্ৰাহ্মণ বলিলেন, “ভদ্রগণ, তোমাদিগকে ধন দিতে কিছুমাত্র আপত্তি নাই ; কিন্তু যে যোগে রত্নবর্ষণ হইয়া থাকে, তাহা ফিরিতে এক বৎসর লাগিবে। যদি তোমরা সেই পৰ্য্যন্ত অপেক্ষা কর, তাহা হইলে আমি তোমাদেরও জন্য রত্নবর্ষণ করাইব ।” dh ইহা শুনিয়া দস্যরা অতিমাত্র ক্রুদ্ধ হইয়া বলিল, “তুমি বড় ধূৰ্ত্ত ! তুমি এই মাত্র প্রেষণক, দিগকে ধন দিলে, আর আমাদিগকে এক বৎসর অপেক্ষা করিতে বলিতেছ!” অনন্তর তাহারা তীক্ষ তরবারির আঘাতে ব্ৰাহ্মণকে দ্বিখণ্ডিত করিয়া রাস্তায় ফেলিয়া গেল এবং ত্বরিতবেগে প্রেষণকদিগের অনুধাবন করিল। যুদ্ধে দ্বিতীয় দলের জয় হইল ; তাহারা প্রেষণাকদিগকে নিহত করিয়া তাহদের ধন আত্মসাৎ করিল ; কিন্তু পরীক্ষণেই নিজের দুই দলে বিভক্ত হইয়া কাটাকাটি আরম্ভ করিল এবং ক্রমে দুই শত পঞ্চাশ জন পঞ্চােত্ব লাভ করিল। অনন্তর হত্যাবশিষ্টেরা আবার দুই দলে বিভক্ত হইয়া বিবাদে প্ৰবৃত্ত হইল। এইরূপে কাটাকাটি করিতে করিতে শেষে তাহদের দুই জন মাত্র জীবিত রহিল। সহস্ৰ দন্ত্র্যর মধ্যে অপর সকলেই জীবলীলা সংবরণ করিল। হতাবিশিষ্ট দম্যদ্বয় তখন সমস্ত ধন লইয়া, কোন গ্রামের নিকটবৰ্ত্তী জঙ্গলে লুকাইয়া