আহারের ব্যবস্থা আছে। জিজ্ঞাসা করিলাম আমিষ হউক, নিরামিষ হউক, তাজা হউক, বাসি হউক কিছু খাইতে পাইব কি? তাহারা কহিল মদ্য যত চাও পাইবে খাদ্য নয়। তখন ভাবিলাম নিদ্রাদেবীর হৃদয় কোমল তিনি আহার না দিন বিস্মৃতি দিবেন। কিন্তু তাঁহার জগৎজোড়া অঙ্কেও তিনি সে রাত্রে আমাকে স্থান দিলেন না। বেলেপাথরের মেজেওয়ালা ঘর ঠাণ্ডা কনকন করিতেছে; একটি পুরাতন খাট ও একটি জীর্ণ মুখ ধুইবার টেবিল ঘরের আসবাব।
সকাল বেলায় ইঙ্গভারতী বিধবাটি প্রাতরাশ খাইবার জন্য ডাকিয়া পাঠাইলেন। ইংরেজি দস্তুরে যাহাকে ঠাণ্ডা খানা বলে তাহারই আয়োজন। অর্থাৎ গতরাত্রির ভোজের অবশেষ আজ ঠাণ্ডা অবস্থায় খাওয়া গেল। ইহারই অতি যৎসামান্য কিছু অংশ যদি উষ্ণ বা কবোষ্ণ আকারে কাল পাওয়া যাইত তাহা হইলে পৃথিবীতে কাহারও কোনো গুরুতর ক্ষতি হইত না—অথচ আমার নৃত্যটা ভাঙায়তোলা কইমাছের নৃত্যের মতো এমন শোকাবহ হইতে পারিত না।
আহারান্তে নিমন্ত্রণকর্ত্রী কহিলেন, যাঁহাকে গান শুনাইবার জন্য তোমাকে ডাকিয়াছি তিনি অসুস্থ শয্যাগত; তাঁহার শয়নগৃহের বাহিরে দাঁড়াইয়া তোমাকে গাহিতে হইবে। সিড়ির উপর আমাকে দাঁড় করাইয়া দেওয়া হইল। রুদ্ধ দ্বারের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করিয়া গৃহিণী কহিলেন, ওই ঘরে তিনি আছেন। আমি সেই অদৃশ্য রহস্যের অভিমুখে দাঁড়াইয়া শোকের গান বেহাগরাগিণীতে গাহিলাম, তাহার