পাতা:জীবন-স্মৃতি - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৩৪৮).pdf/২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২২
জীবন-স্মৃতি

যেদিন কোনােমতে এইখানে আসিতে পারিতাম সেদিন ছুটির দিন বলিয়াই বােধ হইত।

 বাড়িতে আরো একটা জায়গা ছিল সেটা যে কোথায় তাহা আজ পর্যন্ত বাহির করিতে পারি নাই। আমার সমবয়স্কা খেলার সঙ্গিনী একটি বালিকা সেটাকে রাজার বাড়ি বলিত। কখনো কখনাে তাহার কাছে শুনিতাম, “আজ সেখানে গিয়াছিলাম।” কিন্তু একদিনও এমন শুভযােগ হয় নাই যখন আমিও তাহার সঙ্গ ধরিতে পারি। সে একটা আশ্চর্য জায়গা, সেখানে খেলাও যেমন আশ্চর্য খেলার সামগ্রীও তেমনি অপরূপ মনে হইত সেটা অত্যন্ত কাছে; একতলায় বা দোতলায় কোনো একটা জায়গায় কিন্তু কোনোমতেই সেখানে যাওয়া ঘটিয়া উঠে না। বালিকাকে জিজ্ঞাসা করিয়াছি, রাজার বাড়ি কি আমাদের বাড়ির বাহিরে? সে বলিয়াছে, না, এই বাড়ির মধ্যেই। আমি বিস্মিত হইয়া বসিয়া ভাবিতাম, বাড়ির সকল ঘরইতো আমি দেখিয়াছি কিন্তু সে-ঘর তবে কোথায়? রাজা যে কে সে-কথা কোনােদিন জিজ্ঞাসাও করি নাই, রাজত্ব যে কোথায় তাহা আজ পর্যন্ত অনাবিষ্কৃত রহিয়া গিয়াছে, কেবল এইটুকু মাত্র পাওয়া গিয়াছে যে, আমাদের বাড়িতেই সেই রাজার বাড়ি।

 ছেলেবেলার দিকে যখন তাকানো যায় তখন সবচেয়ে এই কথাটা মনে পড়ে যে, তখন জগৎটা এবং জীবনটা রহস্যে পরিপূর্ণ। সর্বত্রই যে একটি অভাবনীয় আছে এবং কখন যে