পাতা:জীবন-স্মৃতি - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৩৪৮).pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬০
জীবন-স্মৃতি

চুচুড়ার বাসায় ফিরিয়া আসেন ও অল্পদিনেই তাঁহার মৃত্যু তাঁহার কন্যার কাছে শুনিতে পাই আসন্ন মৃত্যুর সময়েও “কি মধুর তব করুণা প্রভো” গানটি গাহিয়া তিনি চিরনীরবতা লাভ করেন।


বাংলাশিক্ষার অবসান

 আমরা ইস্কুলে তখন ছাত্রবৃত্তি ক্লাসের এক ক্লাস নিচে বাংলা পড়িতেছি। বাড়িতে আমরা সে ক্লাসের বাংলা পাঠ্য ছাড়াইয়া অনেকদূর অগ্রসর হইয়া গিয়াছি। বাড়িতে আমরা অক্ষয়কুমার দত্তের পদার্থবিদ্যা শেষ করিয়াছি, মেঘনাদবধও পড়া হইয়া গিয়াছে। পদার্থবিদ্যা পড়িয়াছিলাম, কিন্তু পদার্থের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক ছিল না, কেবল পুঁথির পড়া—বিদ্যাও তদনুরূপ হইয়াছিল। সে সময়টা সম্পূর্ণ নষ্ট হইয়াছিল। আমার তো মনে হয় নষ্ট হওয়ার চেয়ে বেশি; কারণ, কিছু না করিয়া যে সময় নষ্ট হয় তাহার চেয়ে অনেক বেশি লোকসান করি কিছু করিয়া যে সময়টা নষ্ট করা যায়। মেঘনাদবধ-কাব্যটিও আমাদের পক্ষে আরামের জিনিস ছিল না। যে জিনিসটা পাতে পড়িলে উপাদেয় সেইটাই মাথায় পড়িলে গুরুতর হইয়া উঠিতে পারে। ভাষা শিখাইবার জন্য ভালো কাব্য পড়াইলে তরবারি দিয়া ক্ষৌরী করাইবার মতো