পাতা:জীবনী-কোষ - দ্বারকানাথ বসু.pdf/২১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধৰ্ম্ম পরিত্যাগ পূৰ্ব্বক খৃষ্টান ধৰ্ম্ম গ্রহণ করেন। অতঃপর মাদ্রাজে গমন করিয়া ইংরাজি সংবাদ পত্রে সারগর্ভ প্রবন্ধ লিখিয়া অনতিকাল মধ্যে প্রতিষ্ঠা লাভ করিলেন । এই সময় ইনি মাদ্রাজ কলেজের অধ্যক্ষের কন্সার পাণিগ্রহণ করেন। ১৮৫৬ খৃষ্টাব্দে ইনি সস্ত্রীক কলিকাতায় প্রত্যাগমন করিয়া, পুলিস আদালতে কেরাণির কার্য্যে নিযুক্ত হন । পরে সেই আদালতের দোভাষীর (ইন্টার প্রিটার) কাৰ্য্য প্রাপ্ত হন । ১৮৫৮ খৃষ্টাব্দে মধুসুদন রত্নাবলী নাটকের ইংরাজি অনুবাদ করেন । অতঃপর মাতৃভাষার চর্চা আরম্ভ করিয়া কবিবর দুই বৎসরের মধ্যে ক্রমান্বয়ে নিম্ন লিখিত গ্রন্থনিচয় প্রণয়ন করিয়া অক্ষয় কীৰ্ত্তি অর্জন করেন—শৰ্ম্মিষ্ঠা নাটক, পদ্মাবতী নাটক, তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য, একেই কি বলে সভ্যতা, বুড়ো সালিকের ঘাড়ের রো, মেঘনাদ বধ কাব্য, ব্রজঙ্গিনা কাব্য, কৃষ্ণ কুমারী নাটক, এবং বীরাঙ্গন কাব্য। আইন শিক্ষার্থ মধুসূদন ১৮৬২ খৃষ্টাব্দে সপরিবার ইংলণ্ডে গমন করেন। ইংলণ্ডে অবস্থিতি কালে ইনি “চতুর্দশাবলী কবিতা” বিরচিত করেন । বিদ্যাসাগর মহাশয় এই সময় ইহঁার আর্থিক সাহায্য । [ ২১৬ ] মধুসূদন করিতেন; কবিবর তাহ ৮৬ সংখ্যক কবিতায় প্রকাশ করিয়াছেন— করুণার সিন্ধু তুমি, সেই জানে মনে, দীন যে, দীনের বন্ধু ! * * আইন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হইয়া ইনি কলিকাতায় প্রত্যাগমন পূৰ্ব্বক হাইকোর্টের ব্যারিষ্টার হইলেন। অর্থের অভাবে ইহঁার শেষ জীবন দুঃখে অতিবাহিত হয়। স্ত্রীর মৃত্যুর পর স্বয়ং রুগ্ন শয্যাশায়ী হইলেন। বিবিধ কষ্ট ভোগ করিয়া ১৮৭৩ খৃষ্টাব্দে ২৯শে জুন কবিবর আলিপুরের দাতব্য চিকিৎসালয়ে ইহ জীবনের জালা যন্ত্রণ হইতে মুক্তি লাভ করেন । পিতৃমাতৃ বিহীন হইয়৷ ইহঁার দুইটী পুত্র আকুল সাগরে পতিত হইল । মধূসুদন বঙ্গভাষায় অমিতাক্ষর ছন্দের প্রথম প্ৰবৰ্ত্তক । বঙ্গভাষায় যে বীররসাত্মক কবিতা প্রণয়ন করা যায়, তাহ ইনি প্রথম প্রদর্শন করেন। ভাষার উন্নতি সাধন করিয়া, কবিবর বঙ্গবাসীর চিরকৃতজ্ঞতা ভাজন হইয়াছে। রচনার জটিলতা, উপমাউপমেয়ের অসঙ্গতি, যতির স্থানচ্যুতি প্রভৃতি দোষে দুষিত হইলেও, মধুসূদনের কাব্যের গুণরাশি এই সকল দোষ নাশ করিতে এবং বাঙ্গালা সাহিত্যে কবির নাম অক্ষয় করিতে সম্পূর্ণ রূপে সমর্থ। {ိုႏိုင္ငံိ