পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৬
ঝাঁশির রাণী।

ভরণ-পোষণের জন্য যে বৃত্তি নির্দিষ্ট করিয়া দিয়াছেন, সেই বৃত্তি আমি দিতে প্রস্তুত আছি। তুমি ঝঁশির কেল্লা ও সহর আমাকে ছাড়িয়া দেও।” এই কথা শুনিবামাত্র রাণীর অত্যন্ত ক্রোধ উৎপন্ন হইল। তিনি এই বিষয়ের পরামর্শ করিবার জন্য আপনার দেওয়ান ও প্রধান-মণ্ডলীকে ডাকাইলেন। তাহারা বলিল, যদি আপনি বোছার রাণী লয়্যী বাইর নিকট হইতে বৃত্তি প্রাপ্ত হন, তবে আর তাহার সহিত যুদ্ধ করিবার প্রয়োজন কি? এই কথা শুনিয়া রাণীর অত্যন্ত কষ্ট হইল; এবং এই কাপুরুষোচিত পরামর্শ অগ্রাহ্ করিয়া সেই তেজস্বিনী মহিলা নথে-খার নিকট এইরূপ উত্তর পাঠাইয়া দিলেন –“আমি শিবরাঙ-ভাউর পুত্র- বধূ; তোমাদিগের ন্যায় বুলেখণ্ডের লোকদিগকে স্ত্রীলোক বানাইয়া ছাড়িয়া দিতে পারি, এরূপ সামর্থ্য আমার আছে—অতএব তুমি এই সমস্ত বিবেচনা করিয়া যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও।” এই উত্তর প্রাপ্ত হইবা- মাত্র নথে-খার ক্রোধাগ্নি প্রজ্বলিত হইল এবং তিনি সসৈন্যে ঝঁশি-অভি- মুখে যাত্রা করিলেন। এদিকে রাণীঠাকুরাণী, ঝাঁশি-রাজ্যের অভিজাত ঠাকুর-মণ্ডলী ও বুলেখণ্ডের জাইগীরদারদিগকে নিমন্ত্রণ করিয়া দরবার। বসাইলেন এবং সেই দরবারে তাহাদিগকে বলিলেন, তোমরা আমার অধীনস্থ সর্দার—আমার আব্রু ও মান রক্ষা করা তোমাদিগের কর্তব্য। রাণীঠাকুরাণীর এই কথা শুনিয়া বুণ্ডেল-সর্দারেরা বলিল “ঝঁশির উপর ইংরাজদিগেরই সাৰ্বভৌম আধিপত্য। বোছা আমাদিগের সমান একটা খণ্ডরাজ্য মাত্র—বোছার হস্তে সার্বভৌম অধিকার ন্যস্ত করা। আমাদিগের কর্ত্তব্য নহে। যে পর্যন্ত আমাদিগের দেহে প্রাণ থাকিবে সে পর্যন্ত এই রাজ্য তাহাদিগকে অধিকার করিতে দিব না।” এই পণ- অনুযায়ী পত্র লিখিয়া নথে খার নিকট পাঠান হইল। এবং সেই সঙ্গে পাঁচটা গোল ও কিঞ্চিৎ বারুদ পাঠাইয়া এইরূপ ইঙ্গিত করা হইল যে “এই সমস্ত উপকরণ আমাদিগের নিকট আছে—অতএব তোমরা যদি