পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঝাঁশির রাণী।
২৭

মরণের মুখে আসিতে চাও, তো ঝাঁশিতে আসিবে।” যুদ্ধের আমন্ত্রণ পৌছিবামাত্র নথে-খা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হইল। কিন্তু এদিকে রাণীর সৈন্য আদৌ প্রস্তুত ছিল না। কারণ, ইতিপূর্ব্বে, ইংরাজ-সরকার ঝুঁশির সৈন্য-সংখ্যা কমাইয়া দিয়াছিলেন এবং কেল্লার উপরিস্থিত তোপ ও তাহার গোলা-বারুদ নষ্ট করিয়া ফেলিয়াছিলেন। এক্ষণে, রাণীঠাকুরাণী আবার সৈন্য সংগ্রহ করিতে লাগিলেন—গোলাবারুদ প্রস্তুত করিবার কারখানা খুলিলেন; কেল্লার মধ্যে পূর্ব্বেকার যে তিন তোপ পোঁতা ছিল এবং রাজবাড়ীর মধ্যে যে চারিটা তোপ লুকানো ছিল—এই সকল এক্ষণে বাহিরে আনাইয়া কেল্লার প্রকাণ্ড বুরুজের উপর তাহাদিগকে উঠানো হইল; ঝাঁশি-রাজ্যের সর্দার ও ঠাকুর-মণ্ডলীর নিকট গ্রামে গ্রামে নিমন্ত্রণ পাঠান হইল। তাহারা স্বীয় অধীনস্থ সশস্ত্র অনুচর লইয়া উপস্থিত হইল। রাতারাতি তোপ চালাইবার সুব্যবস্থা হইল, উৎকৃষ্ট গোলন্দাজ নিযুক্ত হইল এবং প্রাতঃকালে দেওয়ান জওহর সিংহের হস্তে রণকঙ্কণ পরাইয়া তাহাকে সেনাপতিত্বে বরণ করা হইল। সেনাপতি জওহর সিংহ দুর্গপ্রাচীরের উপর তোপ ও গোলন্দাজ সৈন্য সজ্জিত রাখিলেন এবং এক সহস্র বাছাবাছা শস্ত্রধারী পদাতিক, শত্রুর মোহরা আক্রমণ করিবার জন্য প্রস্তুত রাখিলেন। স্বয়ং রাণী সাহেব পাঠানী বেশ ধারণ করিয়া কেল্লার মুখ্য বুরুজের উপর উপস্থিত রহিলেন এবং সেইখানে পেশোয়া আমলের পুরাতন নিশান ও ইংরাজদত্ত “য়ুনিয়জ্যাক” পতাকা স্থাপিত করিলেন। এদিকে, নথে-খা, ভাবী বিজয়াশায় উৎফুল্ল হইয়া রাষ্ট্রীয় নিশান-পতাকা উড্ডীন করিয়া মহাসমারোহে ঝুঁশিতে আসিয়া উপস্থিত হইল। রানিঠাকুরাণী, কেল্লার দক্ষিণ-অভিমুখে তাহাদিগকে প্রবেশ করতে দিলেন—তাহাতে কোন বাধা দিলেন না; পরে, তোপের আন্দাজের মধ্যে আসিবামাত্র তাঁহার চতুর গোলন্দাজ গোলাম-গোশ-খাকে গোলাবর্ষণ করিতে আদেশ করিলেন। তদনুসারে প্রচণ্ড গোলাবর্ষণ