পাতা:ঝাঁশির রাণী - জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ঝাঁশির রাণী।
৩৭

লিখিয়া, তাহাদিগের অভিপ্রায় অবগত হইয়া, পূর্ব্ব হইতেই এ সম্বন্ধে পরামর্শ স্থির করিয়া রাখিয়াছিলেন। সেই পরামর্শ-অনুসারে, তাঁহারা দরবারে এইরূপ প্রস্তাব উপস্থিত করিলেন যে, ইংরাজ-সৈন্যের আগমনে কোন প্রকার বাধা না দিয়া, ইংরাজ সেনাপতির সহিত সাক্ষাৎ করিয়া, তাহারা যে ভুল বুঝিয়াছেন, সেই ভুল ঘুচাইয়া দেওয়া হউক এবং পূর্বের ন্যায় ইংরাজ-সরকারের সহিত সখ্য স্থাপন করা হউক। কিন্তু এই প্রস্তাব কাহারও মনোনীত হইল না। নথে-খার সহিত যুদ্ধ ও ঋশি প্রদেশের বন্দোবস্ত করিবার জন্য যে সমস্ত লোক সৈন্যমধ্যে রাখা হইয়াছিল, তাহারা ঝাঁশি-রাজ্যের পুরাতন ভৃত্য- ঝঁশি খাস করিবার সময় ইংরাজেরা তাহাদিগকে কর্ম্ম হইতে রহিত করে। এই কারণে, ইংরাজ-সরকারের বিরুদ্ধে তাহাদিগের দ্বেষবুদ্ধি জাগৃত ছিল। ইংরাজ-সৈন্য ঝাঁশি আক্রমণ করিবার জন্য আসিতেছে, এই সংবাদ শুনিৰামাত্র তাহারা যুদ্ধের জন্য লালায়িত হইল।

 রাণীঠাকুরাণী কেল্লার মধ্যে থাকায়, প্রধান-মণ্ডলী ব্যতীত আর কাহারও তাঁহার নিকট যাইবার অনুমতি ছিল না—সুতরাং, ইংরাজ- পক্ষের প্রকৃত বৃত্তান্ত তিনি জানিতে পারিতেন না, ইংরাজেরাও তাঁহার প্রকৃতি অভিপ্রায় অবগত হইতে পারিত না। কেহ বলেন,—ইংরাজ- সৈন্যশিবির হইতে এই ভাবে পত্র আইসে, “আপনি, লক্ষ্মণরাও দেও- যানজী, লালা-ভাউ বশি প্রভৃতি আট ব্যক্তিকে সঙ্গে লইয়া, নিঃশস্ত্র হইয়া আমাদিগের সহিত সাক্ষাৎ করিবেন।” কিন্তু এই কথা নাকি স্বাভিমানিনী রাণীঠাকুরাণীর ভাল লাগে নাই, তাই যুদ্ধের আরম্ভ হইল। কেহ বলেন—রাণী ও তাহার সর্দার-মণ্ডলী বিদ্রোহীদিগের দলভুক্ত হইয়াছে ইংরাজদিগের বিশ্বাস হওয়ায়, ইংরাজেরা তাহাদিগকে কয়েদ করিবার মৎলব করিয়াছিলেন। এবং এই কথা রাণী জানিতে পারিয়াই “মরণ রুচে বীরের—না রুচে অপযশ কলঙ্কে” মহারাষ্ট্রীয় কবি মোরা-