পাতা:ডাকঘর - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
ডাকঘর

গালিয়ে ঢেলে দিচ্চে। আর তার কী নৃত্য! নুড়িগুলোকে ঠুং ঠাং ঠুং ঠাং করে বাজাতে বাজাতে কেবলি কল্ কল্ ঝর্ ঝর্ করতে করতে ঝরণাটি সমুদ্রের মধ্যে গিয়ে ঝাঁপ দিয়ে পড়চে। কোনো কবিরাজের বাবার সাধ্য নেই তাকে একদণ্ড কোথাও আটকে রাখে। পাখীগুলো আমাকে নিতান্ত তুচ্ছ একটা মানুষ বলে যদি একঘরে করে না রাখত তাহলে ঐ ঝরণার ধারে তাদের হাজার হাজার বাসার একপাশে বাসা বেধে সমুদ্রের ঢেউ দেখে দেখে সমস্ত দিনটা কাটিয়ে দিতুম।

অমল

 আমি যদি পাখী হতুম তাহলে—

ঠাকুর্দ্দা

 তাহলে একটা ভারি মুস্কিল হত। শুনলুম তুমি নাকি দইওয়ালাকে বলে রেখেছ বড় হলে তুমি দই বিক্রি করবে— পাখীদের মধ্যে তোমার দইয়ের ব্যবসাটা তেমন বেশ জমত না। বোধহয় ওতে তোমার কিছু লোকসানই হত!

মাধব

 আর ত আমার চলল না! আমাকে সুদ্ধ তোমরা ক্ষেপিয়ে দেবে দেখচি! আমি চল্লুম!

অমল

 পিসেমশায়, আমার দইওয়ালা এসে চলে গেছে?

মাধব

 গেছে বই কি! তোমার ঐ সখের ফকিরের তল্পী বয়ে ক্রৌঞ্চদ্বীপের পাখীর বাসায় উড়ে বেড়ালে তার ত পেট চলে না! সে তোমার জন্য এক ভাঁড় দই রেখে গেছে। বলে গেছে তাদের