চারদিকে এখন বর্ষা, জল শুখাইয়া মাঠে পথ পড়িলে তাকে আমি গোপালখালি মাইনর ইস্কুলে ভরতি করিয়া দেই। বেতন মাপ, আর আমি যখন দশদুয়ারে ভিক্ষা করি—কৃষ্ণের জীব, তাকেও কৃষ্ণে উপবাসী রাখিবে না।
কথাটি উপস্থিত মালোদের সকলেরই মনঃপুত হইল: মালোগুষ্টির মধ্যে বিদ্যামান লোক নাই, চিঠি লেখাইতে, তমসুকের খত লেখাইতে, মাছ বেপারের হিসাব লেখাইতে গোপালনগরের হরিদাস সা’র পাও ধরাধরি করি, ভাল ভাল মাছ খাওয়াই। এ যদি বিদ্যামান হইতে পারে মালোগুষ্টির গৈরব।
তবে আর তাকে উদয়তারার সাথে গোকনগাঁওয়ে দিয়া কাজ নাই, এখানেই রাখ। সামনে তিন মাস পরেই সুদিন।
বনমালী স্বীকৃত হইয়া বাড়ি আসিল। কিন্তু ব্যবস্থাটা উদয়তারার মনঃপূত হইল না।
কয়েক দিন আগে পাড়াতে একটা বিবাহ গিয়াছে। এখন জামাই আসিয়াছে দ্বিরাগমনে। যুবতীরা এবং অনুকূল সম্পর্কযুক্তা বর্ষীয়সীরা মিলিয়া ঠিক করিল জামাইকে আচ্ছা ঠকান ঠকাইতে হইবে। জামাই অনেকগুলি খারাপ কাজ করিয়াছে। প্রথমতঃ সে তাদের জন্য পান-বাতাসা, পানের মসলা এ-সব আনে নাই; দুপুরে তার স্নানের আগে মেয়েরা গাহিতে লাগিল: জামাই খাইতে জানে, নিতে জানে, দিতে জানে না, তারে তোমরা ভদ্র বইলো না। জামাই যদি ভদ্র হইত, বাতাসার হাঁড়ি আগে দিত, জামাই খাইতে জানে,