পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/২৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

তাহার সঙ্গে সঙ্গে গমন করিল। সেই মনে কুসীর মুখখানি চিত্রিত হইয়াছিল। মন হইতে সেই চিত্ৰখানি মুছিয়া ফেলিবার নিমিত্ত হীরালাল বার বার চেষ্টা করিতে লাগিল। একেবারে মুছিয়া ফেলা দূরে থাকুক, অধিকক্ষণের নিমিত্ত সে তাহা আচ্ছাদিত অবস্থায়ও রাখিতে পারিল না। অন্য চিন্তা দ্বারা এক একবার সে সেই চিত্ৰখানিকে আবৃত করে, কিন্তু আবার একটু অন্যমনস্ক হয়, আর পুনরায় তাহা বাহির হইয়া পড়ে। হীরালালের তখন যেন চমক হয়, সে তখন আপনাকে ভৎসনা করিয়া বলে,—“দূর ছাই। আবার তাহাকে ভাবিতেছি!” মাঠ হইতে বাটী প্রত্যাগমনের দুইটি পথ ছিল; একটি কুসীর বাটীর সন্মুখ হইয়া, অপরটি অন্যদিক দিয়া। ভুলক্রমে অবশ্য, হীরালাল প্রথম পথটি অনুসরণ করিল। ভুলক্রমে যখন এই পথে আসিয়া পড়িয়াছি, তখন কুসী। আজ কেমন আছে না দেখিয়া যাওয়াটা ভাল হয় না। সেই কথা জিজ্ঞাসা করিবার নিমিত্ত ভুলক্রমে মেসো-মহাশয়ের বাটীতে সে গমন করিল। পূৰ্ব্বদিন অপেক্ষা কুসীর বেদনা অধিক হইয়াছিল। সে জন্য মাসীকে হীরালাল বলিল,— “কুসীর পায়ে একটু ঔষধ দিতে হইবে, ও-বেলা আমি ঔষধ আনিয়া দিব।” এ কথাটাও কি সে ভুলক্রমে বলিয়াছিল? হীরালাল যে ডাক্তারখানা হইতে মূল্য দিয়া ঔষধ আনিবে, মাসী তাহা বুঝিতে পারেন নাই। সে জন্য কোনও আপত্তি করিলেন না। আজ মেসো-মহাশয়ের সহিতও হীরালালের আলাপ হইল। ঘরের ভিতর গিয়া তাহার তক্তাপোষের একপার্শ্বে বসিয়া হীরালাল অনেকক্ষণ গল্প-গাছা করিল। মেসো-মহাশয় কুসীর ও কুসীর পিতার কথা বলিলেন। তাহার বাড়ী কোথায়, তাহারা কোন গাই, কাহার সন্তান, স্বভাব কি সকল পরিচয়ও হীরালালকে তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন। মেসো-মহাশয়েরর নিজের থাও অনেক হইল। অপরাহে হীরালাল যথারীতি আর এক প লইয়া রামপদদিগের ঘর হইতে বাহির হইল। কিন্তু সে দিন সে মাছ ধরিতে না। লোককে জিজ্ঞাসা করিয়া একটি মাঠ পার হইয়া নিকটস্থ আর একটি গ্রাম অভি করিতে লাগিল। সেই গ্রামে ডাক্তারখানা ছিল। সেই গ্রামে উপস্থিত হইয়া রািসহিত পরামর্শ করিয়া, সে কুসীর জন্য কিছু ঔষধ ক্রিয় করিল। যাহাতে শরীরে বলা হয় ও রাত্রিতে নিদ্ৰা হয়, মেসো-মহাশয়ের নিমিত্তও সেইরূপ কিছু ঔষধ লইল। কুসীর ঔষধ শিশিতে ও মেসো-মহাশয়ের ঔষধ কীেটাতে ছিল। ভুল হইবার কোনও সম্ভাবনা ছিল না। পথে আসিতে আসিতে সে দুইটি ঔষধ হইতেই ডাক্তারখানার কাগজ তুলিয় ফেলিল; কুসীদের বাটীতে আসিয়া সে ঔষধ দুইটি মাসীকে প্ৰদান করিল। পায়ে কিরূপ ঔষধ লাগাইতে হয়, তাহা ভাল করিয়া বুঝাইয়া দিতে অনেক বিলম্ব হয়; সেই জন্য তাহা বুঝাইয়া দিবার নিমিত্ত কুসীর নিকট হীরালালকে অনেকক্ষণ বসিয়া থাকিতে হইল। কুসীর নিকট হীরালাল বসিয়া কেবল যে ঔষধের কথা বলিল, তাহা নহে। বঙ্গদেশের কথা, কলিকাতার কথা, নানা প্রকার গল্প হইল। পূৰ্ব্বদিন অপেক্ষা আজ কুসী কিছু ভয়-ভাঙ্গা হইয়াছিল বটে, কিন্তু লজ্জায় সৰ্ব্বদাই তাহাকে মুখ অবনত করিয়া থাকিতে হইয়াছিল। মাঝে মাঝে কেবল দুই-একটি কথার উত্তর দিতে সে সমর্থ হইয়াছিল। হীরালাল চলিয়া গেলে কুসী মনে মনে ভাবিল,-“ইহাকে দেখিলেই আমার এত লজ্জা হয় কেন? অন্য লোককে দেখিলে তো এত লজ্জা হয় না!” সেই রাত্রিতে গৃহিণীকে সম্বোধন করিয়া মেসো-মহাশয় বলিলেন,— “ছােকরা বড় ভাল। বড়ঘরের ছেলে। আমনি একটি ছেলের হাতে কুসীকে দিয়া মরিতে পারিতাম। কিন্তু তাহার পরিচয় লইয়া বুঝিতে পারিলাম যে, সে আশা বৃথা। ইহারা বঙ্গদেশের বড় কুলীন; আমাদের ফোকুলা দিগম্বর ՀճԻՑ sNNis viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro