পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/২৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আর আমি গোল করিব না। আমি চুপ করিয়া বসিয়া থাকিব। আমার হাতে একখানা পাখা দাও, আমার স্ত্রীকে আমিও বাতাস করি।” যেমন করিয়া হউক, পাগলাকে এখন শান্ত করাই শ্ৰেয়ঃ মনে করিলাম। চক্ষু টিপিয়া রসময়বাবুকে আমি ইশারা করিলাম। তিনি দিগম্বরবাবুর হাতে একখানি পাখা দিলেন। দিগম্বরবাবু আমার নিকটে বসিয়া, কুসীর মুখপানে একদৃষ্টি চাহিয়া, বাতাস করিতে লাগিলেন। দুই একবার পাখা নাড়িয়া মূৰ্ছিতা কুসীকে সম্বোধন করিয়া তিনি বলিলেন,- “কন্যা! তোমার জন্য আমি অনেক গহনা আনিয়াছি। একবাক্স গহনা আনিয়াছি। আমাদের বাসায় আছে। তুমি চক্ষু চাহিয়া দেখা! এখনই সে গহনা তোমাকে আমি দেখাইব ।” গহনার লোভে কুসী চক্ষু চাহিল না। মৃত্যুবৎ সে পড়িয়া রহিল। দিগম্বরবাবু উচ্চৈঃস্বরে চাকরকে ডাকিলেন,- “কিষ্টা! কিষ্টা! কিষ্টা কুঁথায় রে!” ভিড়ের ভিতর হইতে কিষ্টা উত্তর দিল,— “হাে! পদাই আজ্ঞা ।” অর্থাৎ “আমি পশ্চাতেই আছি।” দিগম্বরবাবু বলিলেন,- “বাসায় যা । ছোট্রটু সিংহের কােছ হইতে গহনার বাক্সটা চাহিয়া उभे ।।' রসময়বাবু বিরক্ত হইয়া বলিলেন, — “আপনি নিতান্ত পাগল! ছিঃ!” মানুষ সব কি বে-আড়া! দিগম্বরবাবু সকলের প্রশংসাভাজন হইতে এত চেষ্টা করিতেছেন, কিন্তু তবুও কেহ তাঁহার প্রশংসা করে না। গুহনা দেখিয়ুকোথায় সকল লােকে তাঁহাকে ধন্য ধন্য করবে, না গহনার নাম শুনিয়া সকলে বিরক্ত জুইত দুঃখিত হইয়া কিিষ্টকে তিনি গহনার বাক্স আনিতে মানা করিলেন। সকলের অত্যছক্স’নিতান্ত ক্ষুব্ধ হইয়া, বিরসবদনে তিনি ইলেন্ত কিন্তু দুই চারিবার পাখা নাড়িয়া, এবার তিনি দুৰ্ল্ল “আমি তোমাদিগকে বেশ চিনি । লোকের কান S হইলেও, ভিজিট ছাড় না। তোমরা ভিজিটিখোর! আমি যা বলি তা যদি কর, তাহা হইলে তোমাকে আমি ভিজিট দিব। কন্যার মাথাটি তুমি আমার কোলে দাও । পরপুরুষের কোলে যুবতী স্ত্রীলোকের মাথা রাখা উচিত নয়, তাই বলিতেছি।” আমি সে কথায় কোন উত্তর করিলাম না। ভিজিটের লোভে কুসীর মস্তক তাঁহার কোলে দিলাম না। কুসীকে এখনও চেতন করিতে পারিলাম না, সে জন্য আমার বড় ভয় হইল। তাহার নাসিকা হইতে যে রক্তস্রাব হইতেছিল, তাহা বন্ধ হইয়া গিয়াছিল। তাহার নাড়ী অতিশয় দুৰ্ব্বল হইয়াছিল বটে, কিন্তু তাঁহাতে বিশেষ কোন ভয়ের লক্ষণ দেখিতে পাইলাম না। কিন্তু এখনও চেতন হয় না কেন? পাছে সহসা হৃৎপিণ্ডের কাৰ্য বন্ধ হইয়া যায়, সে জন্য আমার বড় ভয় হইল। হৃৎপিণ্ড পরীক্ষা করিবার নিমিত্ত মস্তক অবনত করিয়া, আমি আমার কৰ্ণ,-কুসীর বক্ষস্থলের বামপ্রদেশে রাখিতে যাইতেছি, এমন সময় দিগম্বরবাবু বলিয়া উঠিলেন, — “ও আবার কি! বেল্লিক!” এই বলিয়া আমার সেই কিঞ্চিৎ অবনত বামগালে ঠাস করিয়া তিনি সবলে এক চপেটাঘাত করিলেন। চারিদিকে সকলে ছিছি করিয়া উঠিল। আমি স্তম্ভিত হইলাম। কিন্তু এ বিষয় লইয়া আর অধিক গোল হইল না; কারণ, সেই সময় সকলের দৃষ্টি অন্যদিকে পড়িল। যেস্থানে কুসীকে লইয়া আমি বসিয়াছিলাম, তাহার চারিদিকে লোক দাড়াইয়াছিল। বার বার অনুরোধ করিয়াও, S*R.S. দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.comঠি", "*********