পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৩০৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঁকা পা ফেলিতে ফেলিতে হেলিতে দুলিতে ন্যালা-গাগলার মত তিনি চলিয়াছেন। তাঁহার ঠিক পশ্চাতে একধারে বিন্দী ও অন্যধারে গলা-ভাঙ্গা দিগম্বরী। বিদীর হাতে একটি ছাতি, দিগম্বরীর হাতে একগাছি ঝাঁটা। ঝাঁটাগাছটা তিনি বোধ হয় সঙ্গে করিয়া আনেন নাই, রসময়বাবুর বাটী হইতে সংগ্ৰহ করিয়া থাকিবেন। লোকে ঠিক যেমন মহিষাকে তাড়াইয়া লইয়া যায়, বিন্দী ও তিনি সেইরূপ দিগম্বরবাবুকে তাড়াইয়া লইয়া যাইতেছেন। বিন্দী ও দিগম্বরীর এক ধারে ছোেটুটু সিং, অন্যধারে কিষ্টা। ছোটুর হাতে গহনার বাক্স, আর কিষ্টার হাতে দিগম্বরবাবুর পোষাক রাখিবার কার্পেটের ব্যাগ। ইহাদের পশ্চাতে বরযাত্ৰিগণ। বরযাত্ৰিগণের মধ্যে কেহ কেহ উলু দিতেছিলেন, কেহ কেহ বা ইংরাজী ধরনের “হিপূ হিপ হুরে! হিপূ হিপ হুরে!” জয়ধ্বনি করিতেছিলেন । সকলের পশ্চাতে জনকত লোক চেঙ্গারি মাথায় করিয়া আসিতেছিল। ইহাদের সঙ্গে একজন সিপাহী ছিল। বাবুদিগকে সে বার বার চুপ করিতে অনুরোধ করিতেছিল। সে বলিতেছিল,— “বাবুসাহেব! আপলোক আঞসা গোলমাল ন কিজিয়ে! ইয়ে ছাউনি হায়। বড়ি খারাপ জায়গা। রসময়বাবু, সাহেবসে হুকুম লিয়া সচ, মগর আএসা গোলমাল কারনেসে কুছ বখেড়া উঠেগা।” আমি পুনরায় বলিয়া রাখি, যে স্থানে এই সমুদয় ঘটনা ঘটিয়াছে, তাহার প্রকৃত নাম আমি প্ৰদান করি নাই। স্থান সম্বন্ধে কেহ আমার ভুল ধরিবেন না। এই ব্যাপার দেখিয়া আমি আশ্চৰ্য হইলাম। দিগম্বরবাবু ও তাঁহার পরিচালিকাগণ একটু অগ্রসর হইলে আমি একজন বরযাত্রীকে ডাকিলাম। প্রছে মাসী পলায়ন করেন, সেই ভয়ে আমি এক্কা হইতে নামিতে সাহস করিলাম না। কতকগুলি বরযাত্রী আসিয়া আমার এক্কা ঘিরিয়া দাঁড়াইলেন। রাত্রি দুই প্ৰহরের সময় এরূপ কঠোর স্থানে, পথের মাঝে গোল করিতে আমি তাহাদিগকে প্রথম নিষেধ । তাহার পর আমি জিজ্ঞাসা করিলাম,- “আপনারা ইহার মধ্যে চলিয়া ? আহারাদি করিয়া তাহার পর আসিলে ভাল হইত না? গাড়ীর এখন অনেক *و একজন বরযাত্রী উত্তর করিলেন, ১৮ – “আজ যে অভিনয় দেখিয়াছি, তাহাতে পেট ভরিয়া গিয়াছে, আহারাদির আর আবশ্যক নাই।” আর একজন বলিলেন, — “না মহাশয়! আপনি সে বিষয়ে নিশ্চিন্ত থাকুন। ঐ সকল ঘটনার পর সে স্থানে আর থাকা আমরা উচিত বোধ করিলাম না। বিশেষতঃ পাছে গলা-ভাঙ্গা ঠাকুরাণী কোনরূপ একটা ঢালাঢলি করিয়া বসেন, সেই ভয়ে আরও আমরা চলিয়া আসিলাম । তিনি না করিতে পারেন এমন কাজ নাই। সঙ্গে আবার বিন্দী আছে। সে-ও একজন নামজাদা সেপাই। আমরা বরযাত্রী আসিয়াছি, সেই অপরাধে আমাদিগকেও হয় তো দিগম্বরী প্রহার করিতে পারেন। আহারাদির বিষয়ে আপনার কোন চিন্তা নাই, রসময়বাবু প্রচুর খাদ্য-সামগ্ৰী আমাদিগকে দিয়াছেন। চেঙ্গারি করিয়া ঐ দেখুন, লোকে তাহা লইয়া যাইতেছে। ষ্টেশনের নিকটে গাছতলায় বসিয়া আমরা সকলে আহার করিব। তাহার পর প্রাতঃকালের গাড়ীতে চলিয়া যাইব ।” আমি জিজ্ঞাসা করিলাম,- “রসময়বাবুর কন্যা এখন কেমন আছে?” বরযাত্রী উত্তর করিলেন,- “কন্যা এখন বেশ আছে। একবার সন্ন্যাসী তাহার কানে-কানে কি বলিলেন, তাহাতে তাহার মুখে একটু হাসিও দেখিয়াছিলাম। রসময়বাবু তাহাকে এখন বাটীর ভিতর লইয়া গিয়াছেন। সন্ন্যাসীও বাটীর ভিতর গিয়াছিলেন। শুনিলাম যে, কন্যা শুড় S8 দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.comাির্ড”*********