পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৩৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বালা দুইগাছি লইয়া স্বামী চলিয়া গেলে, ললিতের মাতা, ললিত ও লাবণ্য তিন জনে বসিয়া কাঁদিতে লাগিলেন। অবশেষে ললিত বলিল,— “লাবণ্য, তুমি কাঁদিও না। আমি যখন টাকা আনিতে শিখিব, তখন তোমাকে বড় বড় বালা কিনিয়া দিব।” তৃতীয় পরিচ্ছেদ এখন হইতে ভাল হইব। কৰ্ত্তাটি এরূপ নিষ্ঠুর আচরণ করিয়া বালা লইয়া গেলেন সত্য; কিন্তু তাহার সুখ হইল না। প্রতিদিন যে স্থানে তিনি রাত্রিযাপন করেন, যাহার জন্য তিনি স্ত্রী-পুত্ৰ-কন্যাকে এরূপ নিদারুণ ক্লেশ দেন, বালা বিক্রয়ের টাকা। যাহার শ্ৰীপাদপদ্মে অৰ্পণ করিয়াছিলেন, দুই-চারি দিন পরে সে তাহাকে অনেক অপমান করিয়া বাটী হইতে বাহির করিয়া দিল। ললিতের পিতা শোকে অধীর হইয়া পড়িলেন। ক্ষুন্নমনে ললিতের পিতা সন্ধ্যার পর বাটী আসিলেন। নিঃশব্দে আপনার ঘরে গিয়া শয়ন করিলেন । পাশের ঘরে শিশু দুইটিকে লইয়া ললিতের মাত যাইতেছিলেন। ঘোর রাত্ৰিতে স্বামীর ঘরে একরূপ শব্দ শুনিয়া সহসা তাহার দ্রাভঙ্গুইষ্টি । তাড়াতাড়ি প্ৰদীপ জ্বলিয়া স্বামীর ঘরে গিয়া দেখিলেন যে, স্বামী "গীে গীে” শব্দ কৃষ্ঠুতেছেন, তাঁহার মুখ দিয়া ফেনা বাহির হইতেছে, চক্ষু দুইটি রক্তবর্ণ হইয়াছে। কি যুষ্ট বাবু বার স্বামীকে জিজ্ঞাসা করলেন। বাবু কােন উত্তর দিলেন না। ললিতের মাতা আঁঠখন আর কি করিবেন? সহায় নাই, সম্পত্তি নাই, টাকা নাই— যে, তৎক্ষণাৎ ডাক্তার আনিবেন। বাড়ীওয়ালী বিধবাকে ডাকিয়া মাথায় জল দিয়া তাহার যথাশক্তি শুশ্রুষা করিতে লাগিলেন। প্ৰাতঃকাল হইল। নিকটস্থ একটি ডাক্তারের নিকট গিয়া ললিত অনেক কাদিয়া ও মিনতি করিয়া তাঁহাকে লইয়া আসিল। ডাক্তার আসিয়াই বলিলেন যে, “ইনি আফিম খাইয়াছেন; আমি পুলিশে খবর দিই। ইহাকে হাসপাতালে পাঠাইতে হইবে।” ললিতের পিতার তখন জ্ঞান ছিল। হাসপাতালে যাইতে তিনি কিছুতেই সম্মত হইলেন না। ডাক্তারের নিকট অনেক মিনতি করিয়া পুলিশে সংবাদ-প্রেরণবিষয়েও তাঁহাকে নিবৃত্ত করিলেন। ডাক্তার যথাসাধ্য বাটীতে তাহার চিকিৎসা করিতে লাগিলেন। সমস্ত দিন গেল। সন্ধ্যার পর তাঁহার শরীর একটু সুস্থ বলিয়া বোধ হইল। রাত্রি নয়টার সময়ে তিনি স্ত্রী ও পুত্ৰ-কন্যাকে আপনার নিকট বসাইয়া স্নেহের সহিত বলিতে লাগিলেন,- “দেখ, আমি এতদিন অন্ধ ও পাগল হইয়াছিলাম; তোমরা আমাকে ক্ষমা কর।” ললিতের মাতা বলিলেন,- “নিশ্বাস ফেলিতে তোমার কষ্ট হইতেছে, এখন আর অধিক কথা কহিয়া কাজ নাই। সম্পূর্ণরূপে ভাল হইয়া তাহার পর যাহা কিছু বলিবার, তখন বলিবে।” হাঁপাইতে হাঁপাইতে ললিতের পিতা উত্তর করিলেন,- “না না! আমি বেশ আছি। আমার শরীরে এখন আর কোন অসুখ নাই। ললিত বাবা! লাবণ্য মা! এস বাবা, এস মা, আমার কাছে

  • 3.1-ՀԱՊ sNAls viði (SS BS! ro www.amarboi.com ro Vyg)