পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৫১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আফিসে গমন করিলেন। আফিসের সাহেবেরা তাঁহার শরীরের অবস্থা দেখিয়া অতিশয় দুঃখিত হইলেন। তাহারা বলিলেন যে,- “তোমার নিজে আসিবার কিছুমাত্র আবশ্যকতা ছিল না, চাবি পঠাইয়া দিলেই হইত।” যাহা হউক, সাহেবেরা সিন্দুক খুলেন নাই। আস্তে আস্তে তিনি আফিসের টাকা পূর্ণ করিয়া দিলেন। তাহার পর সাত দিনের ছুটি লইয়া পুনরায় বাটী আসিলেন। . চারি দিন তিনি শয্যা হইতে আর উঠিতে পারিলেন না। রেলের বড় সাহেব ডাক্তার পাঠাইয়া দিলেন। ক্রমে তিনি সুস্থ হইলেন। ভাল হইয়া পুনরায় তিনি রেলের সাহেবের সহিত সাক্ষাৎ করিলেন। রেলের সাহেব তাঁহাকে পাঁচ হাজার পাঁচ শত টাকা প্ৰদান করিলেন, আর তাহার আফিসে একটী ভাল চাকরি দিতে প্ৰতিশ্রুত হইলেন। তাহার পর নিজের আফিসে গিয়া সাহেবদিগের নিকট হইতে তিনি বিদায় প্রার্থনা করিলেন। সাহেবেরা প্রথম তাঁহাকে ছাড়িতে অনিচ্ছা প্ৰকাশ করিলেন। অবশেষে যখন তাঁহারা শুনিলেন যে, অন্য স্থানে তাঁহার উচ্চপদ ও অধিক বেতন হইতেছে, তখন তাহারা তাঁহাকে ছাড়িয়া দিলেন। রেলের আফিসে মুস্তফি মহাশয় মানসন্ত্রমের সহিত কাজ কৰ্ম্ম করিতে লাগিলেন। অল্পদিনের ভিতরেই সাহেবদের তিনি প্রিয় হইলেন। আফিসের অন্যান্য বাবুরাও তাঁহাকে যথেষ্ট ভক্তি ও শ্রদ্ধা করিতে লাগিল। সংসারে তাঁহার সচ্ছল হইল। স্ত্রীর গহনা হইল, বালকদ্বয়ের ভালরূপ কাপড় চােপড় হইল। কিন্তু ইহার পূৰ্ব্বে যদি তিনি কখন অর্থের কামনা করিতেন, তাহা হইলে সে কামনা কখন নিজের কিম্বা স্ত্রী পুত্রের সুখের জন্যন্তহে; সে কামনা পরের জন্য তিনি করিতেন। তিনি ভাবিতেন যে, “যদি কখন আমার , তাহা হইলে অমুককে আমি এই করিব, অমুকের ঋণ পরিশোধ করিয়া তাহার বাটী বন্ধক হইতে মোচন করিব। এক্ষণে সেই সমুদয় সাধ তাঁহার পূর্ণ হইল। ধন্যবান হইয়া পড়িলেন। ধন মান-সন্ত্রমের সীমা পরিসীমা থাকে না । কাহাকেও একটি পয়সা দিতে হয় না। অমুকের টাকা আছে, এই কয়টী কথা প্রচারিত হইলেই যথেষ্ট। তাহা হইলেই সকলে তাঁহার পায়ে তৈল মর্দন করিতে থাকে। মাশ্চন্টক মহাশয়ের সুখ্যাতি পৃথিবীতে আর ধরে না । কেবল তাহা নহে, যে দিন হইতে মাশ্চন্টক মহাশয় ভগবতীর ব্যবসা আরম্ভ করিলেন, সেই দিন হইতে তিনি ঘোর হিন্দু হইয়া পড়িলেন। তাহার স্ত্রী পূৰ্ব্ব হইতেই যার-পর-নাই শুদ্ধাচারিণী ছিলেন, এখন হইতে কৰ্ত্তাটীও শুদ্ধাচারী হইলেন। মাথায় তিনি বৃহৎ একটা টিকি রাখিলেন। দক্ষিণ হস্তের চতুর্থ অঙ্গুলিতে তিনি সোনার সামান্য একটী আংটী পরিধান করিলেন, গলায় রুদ্রাক্ষের মালা ধারণ করিলেন, বাহুতে একটীমাত্র রুদ্রাক্ষের বীজ পরিলেন। সন্ধ্যা আহ্নিক ব্ৰাহ্মণের যাহা কৰ্ত্তব্য, তাহা তিনি রীতিমত করিতে লাগিলেন। প্রতিদিন গঙ্গাস্নান করিতে লাগিলেন। গঙ্গা-জলে দৈনিক সন্ধ্যা তৰ্পণাদি সমাপ্ত করিয়া, ললাটে দীর্ঘ ফোঁটা কাটিয়া, শরীরের নিম্নভাগে গরদের কাপড় ও উৰ্দ্ধদেশে নামাবলি পরিধান করিয়া, কোশা হাতে করিয়া যখন তিনি বাড়ী প্রত্যাগমন করিতেন, তখন তাঁহাকে দর্শন করিলেও মানুষের চক্ষু সার্থক হইত। পথের লোক ভক্তিভাবে তাঁহাকে প্ৰণাম করিত ও গদগদ স্বরে তাঁহার সুতিবাদ কিরিত। ক্রমে বাড়ীতে তিনি গেরুয়া বস্ত্ৰ পরিধান করিতে লাগিলেন। সকলে স্তম্ভিত হইল,

      • "ʻ°7°7** MfGNRJig{ °itb<q5 q<q5 3R8! mv www.amarboi.com ~v (?o○