পাতা:ত্রৈলোক্যনাথ রচনাসংগ্রহ.djvu/৭৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বড়ালমহাশয় তখন বাড়ী ছিলেন না। অন্যান্য লোকে তাঁহাকে যথেষ্ট সমাদর করিল। সুবালা তাহাকে উত্তরদিকে সেই রায়মহাশয়ের ঘরে লইয়া গেলেন। কুটুম্বকে ভালরূপে ভোজন কেহ বুঝিতে পারিল না। আহারাদির পর সুবালা বলিলেন, — “আপনি এখন তবে একটু বিশ্রাম করুন। বড়ালমহাশয় আমাদের কৰ্ম্মচারী— ” বিজয়বাবু বলিলেন,— “বড়ালমহাশয়কে আমি জানি। বহুকাল পূৰ্ব্বে একবার তাঁহার সহিত আমার সাক্ষাৎ হইয়াছিল। তখন তিনি এই বাড়ীর মেজে খুঁড়িতেছিলেন।” সুবালা হাসিয়া বলিলেন,- “হাঁ, সে সম্বন্ধে একটা কথা আছে, তাহাও আপনাকে পরে বলিব। আপাততঃ বড়ালমহাশয়কে কাগজপত্র প্রস্তুত করিতে বলি। বৈকালবেলা আমার কাকামহাশয়ের বাড়ীতে আমি গমন করিব।” বিজয়বাবু বলিলেন,- “দিনের বেলা আমি শয়ন করি না। ব্যাপার কি বল দেখি?” সুবালা উত্তর করিলেন, — “বৃত্তান্ত কি, তাহা বলিবার পূৰ্ব্বে আপনার নিকট আমার একটি নিবেদন আছে। আমার দুইটি অভিভাবক, —বাল্যকাল হইতে পিতৃমাতৃহীন এই বালিকাকে যাহারা প্ৰতিপালন করিয়াছেন,-আমার স্নেহে তাহারা মুগ্ধ হইয়া, আমার মঙ্গল কামনায় তাহারা একটি কাজ করিয়াছেন। কাজ যে নিতান্ত অন্যায়, তাহা তাহারা বুঝিতে পারেন নাই। যাহারা এ কাজে লিপ্ত ছিলেন, তাহাদিগকে ক্ষমা করিত্যুে হইবে। আপনার পায়ে ধরিয়া আমি এই ভিক্ষা প্রার্থনা করিতেছি।” (C) এই বলিয়া সুবালা মাটিতে বসিয়া বিজয়ব বিজয়বাবু তাঁহার হাত ধরিয়া তুলিলেন। তিনিগুলিলেন,—“না, মা! তুমি আমার পায়ে পড়িও না। দাদার সম্পর্কে তোমাকে আমার উচিত। কিন্তু কি জানি কেন, প্রথম হইতেই তোমাকে আমার মা বলিতে ইচ্ছা! । যেই তোমাকে প্রথম দেখিলাম, আর সেই শব্দ আমার মুখ দিয়া আপনা-আপনি বাহির হইয়া পড়িল! এত সম্পত্তির মোহ যে পরিত্যাগ করিতে পারে, সে দেবতা। তুমি মা লক্ষ্মীস্বরূপ!! পৃথিবীতে এমন কি বস্তু আছে, যাহা তোমাকে আমি দিতে না পারি? তোমার র্যাহারা মঙ্গল কামনা করিয়াছেন, তুমি না বলিলেও তাঁহাদিগকে ক্ষমা করিলাম। কেমন? এখন সন্তুষ্ট হইলে তো?” সুবালা একটু হাসিয়া বলিলেন, — “তবে যাই, বড়ালমহাশয়কে ডাকিয়া আনি। এ সম্পত্তির আমি কিছুই জানি না। তিনি জানেন, আর কােকা মহাশয় জানেন। বড়ালমহাশয় সমস্ত বিষয় আপনাকে বুঝাইয়া দিবেন। যাই, তাঁহাকে ডাকিয়া আনি।” বিজয়বাবু বলিলেন, — “এত ব্যস্ত হইও না। এই খাটের উপর আমার পার্শ্বে উপবেশন কর। এস। দুইজনে গল্প করি। আমার জ্যেষ্ঠ—তোমার দাদামহাশয়ের শেষকালে কি বড় কষ্ট ਏ?" সুবালা উত্তর করিলেন, — “তিনি পক্ষাঘাত রোগ দ্বারা আক্রান্ত হইয়াছিলেন। উঠিতেবসিতে পারিতেন না। সেজন্য অতিশয় ক্লেশ হইয়াছিল।” বিজয়বাবু বলিলেন,- “তুমি বোধ হয় জান যে, বড়ভাইয়ের ও তাঁহার পত্নীর সহিত আমার সদ্ভাব ছিল না। কেন, তাহা তোমার শুনিবার আবশ্যক নাই। কিন্তু আমার মনে কোন বিদ্বেষভাব ছিল না। যদি বল যে, তবে তুমি এখানে আসিতে না কেন? পীড়িত হইলে 8d দুনিয়ার পাঠক এক হও! ~ www.amarboi.comf"ঙলাকনাথ *********