পাতা:দায়ে খুন - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দারোগার দপ্তর, ৮৩ সংখ্যা।

 “সেই ফারমের মনিব-গোমস্তার পদ শূন্য হইয়াছে জানিতে পারিয়া, সেই পদ-প্রার্থী হইয়া, আমি সেই স্থানে একখানি দরখাস্ত করিলাম। আমি যে ফারমে কার্য্য করিতাম, এবং যে কারণে এখন আমার কর্ম্ম নাই, দরখাস্তে তাহারও সমস্ত অবস্থা আমি বিস্তৃতরূপে লিথিয়া দিলাম। যে পদের প্রার্থী হইয়া আমি দরখাস্ত করিলাম, সেই পদ যে আমি প্রাপ্ত হইব, সে আশা আমার অতি অল্পই ছিল। কারণ, বোম্বাই-প্রদেশে সেই কার্য্যের উপযোগী অনেক লোক বর্তমান থাকিতে তাঁহারা একজন অপরিচিত ব্যক্তিকে কেন সেই পদে নিযুক্ত করিবেন? সে যাহা হউক, আমার মনে যতদূর আশা ছিল, তাহার অধিক কার্য্যে পরিণত হইল। দরখাস্ত প্রেরণ করিবার এক সপ্তাহ পরেই আমি সেই ফারম হইতে একখানি পত্র পাইলাম। পত্রখানি পাঠ করিয়া আমি অতিশয় বিস্মিত হইলাম। দেখিলাম, আমার দরখাস্ত মঞ্জুর হইয়াছে, বাৎসরিক ছয়শত টাকা বেতনে আমাকে সেই কার্য্যে নিযুক্ত করা হইয়াছে। উহাতে আরও লেখা আছে যে, এই পত্র পাইবার পর দশদিবসের মধ্যেই সেই স্থানে গমন করিয়া আমাকে আমার নূতন কার্য্যে নিযুক্ত হইতে হইবে।

 “সেই পত্র পাইয়া আমি অতিশয় সন্তুষ্ট হইলাম। ইতিপূর্ব্বে যাহার নিকট আমি কার্য্য করিতাম, তাঁহার নিকট হইতে আমি বাৎসরিক চারিশত আশী টাকা বেতন পাইতাম। এখন তাহা অপেক্ষা আমার একশত কুড়ি টাকা অধিক বেতন হইল। সুতরাং নূতন চাকরী সম্বন্ধে আমি আর কোনরূপ ইতস্ততঃ না করিয়া ব্যবসা করিবার যে ইচ্ছা করিতেছিলাম, তাহা পরিত্যাগ করিয়া বোম্বাই সহরে গমন করিবার জন্য প্রস্তুত হইতে লাগিলাম।