পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

RG দিবরাত্রির কাব্য অবস্থা দাড়িয়েছে, তাতে পদে পদে ব্যথা না পেয়ে তার উপায় ছিল না । গোধূলি-লগ্নে নির্জন তরঙ্গায়িত প্ৰান্তরে তার সঙ্গে পাশাপাশি বেড়াতে যাওয়া হেরম্বের কাম্য নয় সন্দেহ করে, কাম্য হলেও একটা তুচ্ছ খেয়ালের বশে বেড়াতে যাওয়ার উৎসাহ সে সত্যসত্যই দমন করে। ফেলেছে নিশ্চিত জেনে, সুপ্রিয়া কম আহত হয় নি। তবু, হৃদয়কে হেরম্ব জোর করে নিয়ন্ত্রিত করছে এই ধারণা সুপ্রিয়াকে সাস্তুনা দিচ্ছিল ; কিন্তু সে যে ছুতো করে হেরম্বের হাত ধরে টেনে তুলতে চায় এটা হেরম্ব খেয়াল পৰ্য্যন্ত করতে পারল না দেখে নিজেকে তার অপমানিত ও অবহেলিত মনে হতে লাগল। সে যেন বুঝতে পারলা, হেরম্বের মান থেকে সে মিলিয়ে গেছে। একটা কৰ্ত্তব্য-বুদ্ধির, একটা মোটা সাংসারিক প্ৰতিকারস্পৃহার আশ্রয় ছাড়া হেরম্বের কোন মনোবৃত্তিই আর তাকে নিয়ে ব্যাপৃত হয়ে নেই। শেষ পৰ্য্যন্ত মাঠে হেরম্ব তাকে বেড়াতে নিয়ে গেল, কিন্তু বেড়ানো উপভোগ করার ক্ষমতা সুপ্রিয়ার আর ছিল না । সমস্ত দুপুরটা প্ৰকৃতির গ্ৰীষ্ম আর উনানের ধোয়া সহ করে সে কল্পনার জাল বুনেছে। ভেবেছে, পথের গ্লানি কেটে গেলে বিকালে শত অনিচ্ছাতেও নিজেকে ও প্রকাশ না করে পারবে না। নিজের অজ্ঞাতেই ও কত কথা বলবে, ক’ত ভুল করবে, কত সময় অন্যমনে আমার দিকে চাইবে । ও টেরও পা”ব না। ওর কোন কথাটি কুড়িয়ে, কোন ভুলটি ধরে, কোন চাউনির মানে বুঝে ওকে আমি চিনে ফেলছি। সুপ্রিয়া আরও ভেবেছে, আমি এখন বড় হয়েছি। পাঁচ বছর ধরে ভেবে ভেবে আমি বুঝতে পেরেছি। পৃথিবীতে একটা ব্যাপার হয় না । বেশ মেটা করে ভালবাসা বুঝিয়ে না দিলে