পাতা:দিবারাত্রির কাব্য - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দিবারাত্রির কাব্য t७ | কোন প্ৰভেদ থাকত না বাপু । আমরা প্রসব করি ভগবানের কবিতাকে, তার তুলনায় তোমাদের কবিতা ইয়াকি ছাড়া আর কি ! যাই হোক, আনন্দকে দেখে আমি সেদিন প্ৰসৰবেদনা ভুলে গেলাম হেরম্ব ।” “সব মা-ই তাই যায়, মালতী-বৌদি।” মালতী রাগ করে বলল, “তুমি বড় রূঢ় কথা বলে হেরম্ব !” আনন্দ জল আনলে গেলাস হাতে নিয়ে হেরম্ব বলল, “বোসে আনন্দ ” আনন্দ অনুমতির জন্য মালতীর মুখের দিকে তাকাল । মালতী বলল, “বোস লো ছুড়ি, বোস। এ ঘরের লোক। কেমন ঘরের লোক জানিস ? আমার ছেলেবেলার ভালবাসার লোক । ওর যখন বারো বছর বয়স আমাকে বিয়ে করার জন্য ক্ষেপে উঠেছিল । রোজ সন্দেশ-টন্দেশ খাইয়ে কত কষ্টে যে ভুলিয়ে রাখতাম সে কেবল আমিই জানি । হাসিস ক্যানো লো ! একি হাসির কথা ? বিশ বছর ধরে খুজে খুজে তোর বােপকে খুন করতে এসেছে, তা জানিস? আনন্দ বলল, “কি সব বালছ মা ? এর মধ্যেই-” ‘এর মধ্যেই কি লো ? বল না, এর মধ্যেই কি বলছিস ?” “কিছু না মা। চুপ কর।” মালতী। কিন্তু ছাড়ল না । “এর মধ্যেই গিলেছি নাকি আজ, এই তো বলছিলি ? না গিলি নি ? কারণ হল সাধনে বসার জন্য, যখন তখন আমি ওসব গিলি না বাপু” হেরম্ব জিজ্ঞাসা করল, “কি মালতী-বৌদি ? মদ ?”