পাতা:দুই শিষ্য - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুই শিষ্য।
১৫

 আমি সাগ্রহে জিজ্ঞাসা করিলাম, “তিনি কোথায়?

 মনোহর আমার কথা শুনিয়া তখনই ‘বলদেব’ ‘বলদেব’ বলিয়া চীৎকার করিলেন। একজন গৈরিক বসনধারী পশ্চিম দেশবাসী যুবক তখনই আমাদের সম্মুখে আসিয়া দাঁড়াইলেন। পরে অতি বিনীতভাবে উত্তর করিলেন, “আমি নিকটেই আছি গুরুদেব!”

 মনোহর নিজে কোন কথা না বলিয়া আমাকে দেখাইয়া দিলেন। আমি তখন বলদেবকে জিজ্ঞাসা করিলাম, “আপনার সহিত বেহারীগিরির সদ্ভাব আছে?”

 বলদেব অতি বিনীতভাবে উত্তর করিলেন, “আজ্ঞে বিশেষ সম্ভাব। যখন আমরা এক গুরুদেবের শিষ্য, তখন আমাদের মধ্যে ভ্রাতৃস্নেহ রহিয়াছে। বিশেষতঃ আমরা সংসারের সমস্ত মায়াযর বন্ধন ছিন্ন করিয়া গুরুদেবের আশ্রয়ে আসিয়া উপস্থিত হইয়াছি। সংসার ত্যাগ করা, আর মায়ার হস্ত হইতে নিষ্কৃতি লাভ করা এই উভয়ের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য দেখা যায়। আমরা সংসার ত্যাগ করিয়াছি বটে, কিন্তু মায়ার হাত হইতে অব্যাহতি পাই নাই। গুরুদেবের নিকট আসিয়া অবধি তাঁহার অপরাপর শিষ্যগণের সহিত আমার বিশেষ সদ্ভাব হইল। বিশেষতঃ বেহারীর উদার স্বভাব, অমায়িক ভাব ও সরল এবং অকৃত্রিম আচরণে সকলেই তাহার উপর সন্তুষ্ট। তাহা না হইলে আজ তাহার বিহনে মন্দিরের সকলেই অনাহারে থাকিবেন কেন?

 আমি বলদেবের কথায় আন্তরিক প্রীত হইলাম। কিছুক্ষণ চিন্তা করিয়া পুনরায় জিজ্ঞাসা করিলাম, “আজ বেলা একটার সময় বেহারীর সহিত কাহার দেখা হইয়াছিল?”

 ব। আজ্ঞে আমার কোন পরিচিত লোকের।