পাতা:দুর্গেশনন্দিনী বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিমলার পত্র সমাপ্ত ४8६ আমাকে কত কথা কহিয়া পাঠাইলেন, তাহা কি বলিব ? আমি আশ মানির হস্তে তাঙ্গকে পত্র লিখিয়া পাঠাইলাম, তিনিও তাঁহার প্রত্যুত্তর পাঠাইলেন । পুনঃ পুনঃ ঐরূপ ঘটিতে লাগিল। এই প্রকার আদর্শনেও পরম্পর কথোপকথন করিতে লাগিলাম । এই প্রণালীতে তিন বংসর কাটিয়া গেল। যখন তিন বৎসরের বিচ্ছেদেও পরস্পর বিস্তুত হইলাম না, তখন উভয়েই বুঝিলাম যে, এ প্রণয় শৈবাল-পুষ্পের হার কেবল উপরে ভাসমান নহে, পদ্মের ন্যায়, ভিতর বদ্ধমুল । কি কারণে বলিতে পারি না, এই সময়ে তাহারও ধৈর্যাবশেষ হইল। এক দিন তিনি বিপরীত ঘটাইলেন । নিশাকালে একাকিনী শয়নকক্ষে শয়ন করিয়াছিলাম, অকস্মাৎ নিদ্রাভঙ্গ হইলে স্তিমিত দীপালোকে দেখিলাম, শিওরে একসন মল্লযু । - * * মধুর পদে আমার কর্ণরন্ধুে, এই বাক প্রবেশ করিল যে, “প্রণেশ্বরি । ভয় পাইও না । আমি তোমারই একান্ত দাস ” . আমি কি উত্তর দিব ? তিন বৎসরের পর সাক্ষাৎ। সকল কথা ভুলিয় গেলাম—তাহার কণ্ঠলগ্ন হইয়। রোদন করিতে লাগিলাম। শীঘ্র মরিব, তাই আর আমার লজ্জা নাই—সক কথা বলিতে পারিতেছি। যখন আমার বাক্যদুৰ্বি হইল, তখন তাঙ্গকে জিজ্ঞাসা করিলাম, “তুমি কেমন করিয়া এ পুরীর মধ্যে আসিলে ?” . ...' তিনি কছিলেন, “আশ মানিকে জিজ্ঞাসা কর ; তুহার সমভিব্যাহারে বারিবাহক দাস সাজিয়৷ পুরীমধ্যে প্রবেশ করিয়াছিলাম ; সেই পৰ্য্যন্ত লুকায়িত আছি।” আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, “এখন ?” ক্লিকছিলেন, “আর কি ? তুমি যাহ কর।”