ধর্মের, বিশেষত হিন্দুধর্শ্বের, মূল একমাত্র ঈশ্বর। ঈশ্বর সর্বভূতে আছেন ; এজস্ত সৰ্ব্বভূতের হিতসাধন আমাদের ধৰ্ম্ম, কেন না, বলিয়াছি যে সকল বৃত্তিকে ঈশ্বরমুখী করাই মনুষ্যজন্মের চরম উদ্দেশ্ব। যদি সৰ্ব্বভূতের হিতসাধন ধৰ্ম্ম হয়, তবে পরেরও হিতসাধন যেমন আমার ধৰ্ম্ম, তেমনি আমার নিজেরও হিতসাধন আমার ধৰ্ম্ম । কারণ আমিও সৰ্ব্বভূতের অন্তর্গত ; ঈশ্বর যেমন অপর ভূতে আছেন, তেমনি আমাতেও আছেন। অতএব পরেরও রক্ষাদি আমার ধৰ্ম্ম এবং আপনারও রক্ষাদি আমার ধৰ্ম্ম । আত্মপ্রীতি ও জাগতিক প্রীতি এক । শিষ্য । কিন্তু কথাটার গোলযোগ এই যে, যখন আত্মহিত এবং পরহিত পরম্পর বিরোধ, তখন আপনার হিত করিব, না পরের হিত করিব ? পূৰ্ব্বগামী ধৰ্ম্মবেত্ত্বগণের মত এই যে, আত্মহিতে ও পরহিতে পরস্পর বিরোধ হইলে, পরহিত সাধনই ধৰ্ম্ম । গুরু। ঠিক এমন কথাটা কোন ধৰ্ম্মে আছে, তাহা আমি বুঝি না। খৃষ্টধর্মের উক্তি যে, পরের “তোমার প্রতি যেরূপ ব্যবহার তুমি বাসনা কর, তুমি পরের প্রতি সেইরূপ ব্যবহার করিবে।” এ উক্তিতে পরহিতকে প্রাধান্ত দেওয়া হইতেছে না, পরহিত ও আত্মহিতকে তুল্য করা হইতেছে। কিন্তু সে কথা থাক, কেন না, আমাকেও এই অনুশীলনতত্ত্বে পরহিতকেই স্থলবিশেষে প্রাধান্ত দিতে হইবে। কিন্তু তুমি যে কথা তুলিলে, তাহারও সুমীমাংস আছে। সেই মীমাংসার প্রথম এবং প্রধান নিয়ম এই যে, পরের অনিষ্ঠুমাত্রই অধৰ্ম্ম। পরের অনিষ্ট করিয়া আপনার হিতসাধন করিবার কাহারও অধিকার নাই। ইহা হিন্দুধৰ্ম্মেও বলে, খৃষ্ট বৌদ্ধাদি অপর ধর্মেরও এই মত, এবং আধুনিক দার্শনিক বা নীতিবেত্তাদিগেরও মত। অনুশীলনতত্ত্ব যদি বুঝিয় থাক, তবে অবশু বুঝিয়াছ, পরের অনিষ্ট, ভক্তি প্রতি প্রভৃতি শ্রেষ্ঠ বৃত্তি সকলের সমুচিত অনুশীলনের বিরোধী ও বিস্তুকর এবং যে সাম্যজ্ঞান ভক্তি ও প্রীতির লক্ষণ, তাহার উচ্ছেদক। পরের অনিষ্ট, ভক্তি প্রীতি দয়াদির অমুশীলনের বিরোধী, এজন্য যেখানে পরের অনিষ্ট ঘটে, সেখানে তদ্বারা আপনার হিতসাধন করিবে না, ইহা অনুশীলনধৰ্ম্মের এবং হিন্দুধৰ্ম্মের আজ্ঞা। . আত্মপ্রতি-তত্ত্বের ইহাই প্রথম নিয়ম । শিস্য। নিয়মটা কি প্রকারে খাটে—দেখা যাউক। এক ব্যক্তি চোর, সে সপরিবারে থাইতে পায় না, উপবাস করিয়া আছে। এরূপ যে চোরের সর্বদ ঘটে, তাহ।