পাতা:নানা-কথা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

नान-कश । তঁাদের অনেকেরই আজ চৈতন্য হয়েছে। ঐ ঘটনায় আমাদের মধ্যে অনেক অন্যমনস্ক লোকেরও মনে পড়ে গেছে যে, আমাদের একটা সমাজ ব’লে কোন জিনিষ নেই। আমরা ঝরা পাতার : দল, হাওয়ায় আমাদের কখন বা একত্র জড় করে, কখনও বা ছড়িয়ে দেয়। গাছের অসংখ্য পাতা প্ৰত্যেকে স্বতন্ত্র হলেও তাদের সকলের ভিতর নাড়ীর এবং রক্তের বন্ধন আছে-তাদের একের প্রাণের মূলও যেখানে,অপরের প্রাণের মূলও সেখানেদেশের মাটিতে। কিন্তু আজ আমাদের অনেকেরই চোখ ফুটেছে। আমরা নিজের নিজের সঙ্কীর্ণ সমাজ ত্যাগ করলেও, হিন্দুসমাজ আমাদের ত্যাগ করেনি। আমরা নিজেরা শুধু সেই বৃহৎ সমাজের মধ্যে আর একটি সন্ধীর্ণ সমাজ গড়তে চেষ্টা । করেছিলুম,-সৌভাগ্যক্রমে তাতে কৃতকাৰ্য্য হইনি। আজকাল ভারতবাসীর দেহে নূতন প্রাণ এসেছে ; হিন্দুসমাজ একটি সুবৃহৎ স্বদেশী সমাজে পরিণত হচ্ছে, জাতের ভাব দূর হয়ে জাতীয় ভােব উপস্থিত হয়েছে, আমরা পরস্পরের পার্থক্য ভুলে গিয়ে স্বদেশীর সঙ্গে বিদেশীর পার্থক্য অনুভব করতে আরম্ভ করেছি। এ অবস্থায় আমাদের স্বদেশীয়তায় ফেরার অর্থ, আমরা যে বরাবর স্বদেশ ও স্বজাতির অন্তর্ভূত হয়েই আছি, সেই বিষয়ে স্পষ্টজ্ঞান জন্মান। আমরা যে সমাজে ফিরছি, সে সমাজ পূর্বে ছিল না, আজও পূর্ণাবয়বপ্রাপ্ত হয়নি, ভবিষ্যতে তার রূপ যে কি হবে, তাও আমরা আজ ঠিক ধরতে পারিনে। তার স্বরূপ জানিবারও কোন আবশ্যক নেই; শুধু এই জানি যে, আমাদের জাতির মূলশক্তি উদ্বোধিত হয়েছে। সেই শক্তি আমাদের সকলেরই প্ৰাণে জাগরকে হয়ে উঠেছে, যে শক্তির কাৰ্য্য হচ্ছে। আমাদের সমগ্ৰ জাতির অপরূপ শ্ৰী এবং উন্নতি সাধন করা।