পাতা:নানা-কথা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/২৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বৰ্ত্তমান বঙ্গী-সাহিত্য । २४७ আসছি, সে বস্তু যে মহার্ঘ, এ বিশ্বাস অজ্ঞাতসারে আমাদের মনে বদ্ধমূল হয়ে যায়। গুরুজনদের তৈরী মত আমরা বিনাবাক্যে মেনে নেই, কেননা তা মেনে নেবার ভিতর মনের কোনও খাটুনি নেই। যদি আমরাই চিন্তামার্গে ক্লেশ করব, তাহ’লে গুরুর দরকার কি ? আর যদি আমরাই পূজা করব তাহ’লে পুরোহিতের দরকার কি ? কেননা গুরুপুরোহিতেরা সমাজের হাতেগড়া, মানসিক এবং আধ্যাত্মিক labour sawing machines, নব-সাহিত্যের দুর্ভাগ্যই এই যে, তা অতীতের ডিপ্লোমা নিয়ে আমাদের কাছে এসে উপস্থিত হয় না। এ সাহিত্যের মূল্য নিৰ্দ্ধারণ করতে হ’লে নিজের অনুভূতি দিয়ে তা যাচাই করতে হয়, নিজের বুদ্ধি দিয়ে তা পরীক্ষা করতে হয়। আমরা ক'জনে সে পরিশ্রমটুকু করতে রাজি ? সুতরাং নবসাহিত্যের প্রশংসার চাইতে নিন্দাই যে বেশির ভাগ শোনা যায়, তাতে আশ্চৰ্য্য হবার কোনও কারণ নেই। এই সকল নিন্দাবাদের বিচারসূত্রেই আমরা প্রকারান্তরে নব-সাহিত্যের গুণাগুণের বিচার করতে চাই । নব-সাহিত্যের বিরুদ্ধে প্ৰধান অভিযোগ এই যে, তা অপৰ্যাপ্ত ও সস্তা, বিশেষত্বহীন, চুটুকি ও নকল। আমি একে । একে একে এই সকল অভিযোগের উত্তর দিতে চেষ্টা করব। নব সাহিত্যের পরিমাণ যে অপৰ্য্যাপ্ত তা অস্বীকার করবার যো নেই। বৰ্ত্তমানে এত নিত্য নূতন পুস্তক এবং পুস্তিকা, পত্র এবং পত্রিকা ভূমিষ্ঠ হচ্ছে যে, এ যুগের তুলনায় “বঙ্গদর্শনের” যুগের বঙ্গসরস্বতীকে বন্ধ্যা বললেও অত্যুক্তি হয় না। উনবিংশ শতাব্দীতে আমাদের নামে এই অপবাদ ছিল যে, বাঙ্গালী রসনা-সর্বস্ব, বিংশ শতাব্দীতে আমরা যদি কিছু হই ত রচনা