পাতা:নানা-কথা - প্রমথ চৌধুরী.pdf/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

१२ नान-कथी। মাত্র। অনিত্য শব্দকে নিত্য করুবার ইচ্ছে থেকেই অক্ষরের সৃষ্টি। অক্ষর সৃষ্টির পূর্বযুগে, মানুষের মনে করে' রাখবার মত বাক্য রাশি কণ্ঠস্থ করতে করতেই প্ৰাণ যেত। যে অক্ষর আমরা প্ৰথমে হাতে লিখি, তাই পরে ছাপান হয়। সুতরাং ছাপার অক্ষরে উঠলেই যে কোন কথার মৰ্য্যাদা বাড়ে, তা নয়। কিন্তু দেখতে পাই অনেকের বিশ্বাস তার উণ্টো। আজকাল ছাপার অক্ষয়ে যা’ বেরোয় তাই সাহিত্য বলে’ গণ্য হয়। এবং সেই একই কারণে মুদ্রিত ভাষা সাধুভাষ বলে’ সম্মান লাভ করে। গ্রামোফোনের উদারস্থ হয়ে সঙ্গীতের মহাত্ম্য শুধু এদেশেই বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয়। আসলে সে ভাষার ঠিক নাম হচ্ছে বাবু বাঙ্গলা। যে গুণে ইংলিশ বাবু ইংলিশ হয়ে উঠে, সেই গুণেই বঙ্গভাষা বাবু বাঙ্গলা হয়ে উঠেছে। সে ভাষা আলাপের ভাষা নয়, শুধু প্ৰলাপের ভাষা। লেখার যা’ সর্বপ্রথম এবং সর্বপ্রধান গুণ-প্ৰসাদগুণ-সে গুণে বাবু বাঙ্গলা একেবারেই বঞ্চিত। বিদ্যের মত ভাষাও কেবলমাত্র পুথিগত হয়ে উঠলে তার উৰ্দ্ধগতি হয়। কিনা বলতে পারিনে, কিন্তু সদগতি যে হয় না সে বিষয়ে আর সন্দেহ নেই। আসলে এই মুদ্রিত ভাষায় মৃত্যুর প্রায় সকল লক্ষণই স্পষ্ট। শুধু আমাদের মাতৃভাষার নাড়িজ্ঞান লুপ্ত হয়ে রয়েছে বলে? আমরা নব্য বঙ্গ-সাহিত্যের প্ৰাণ আছে কি নেই তার ঠাওর করে উঠতে পারিনে। মুখের ভাষা যে জীবন্ত ভাষা, এ বিষয়ে দু’মত নেই। , একমাত্র সেই ভাষা অবলম্বন করেই আমরা সাহিত্যকে সজীৰ করে তুলতে পাৱব। যেমন একটি প্ৰদীপ থেকে অপর একটি প্ৰদীপ। রাতে হলে পরস্পরের স্পর্শ ব্যতিরেকে সে উদ্দেশ্য সিদ্ধ হয় । না, তেমনি লেখার ভাষাতেও প্রাণ সঞ্চার করতে হলে মুখের