বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:নিষ্কৃতি - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গেলাস হাতে করিয়া জননীর কাছে আসিয়া দাঁড়াইল ছিপি খুলিবার উদ্যোগ করিতেই শৈলজা সেইখান হইতে বলিল, গেলাসে ওষুধ চেলে দিলেই হলো, না রে হরি? জল চাইনে, মুখে দেবার কিছু চাইনে, না? এ ব্যাগারঠ্যালা কাজ তোমাদের আমি বা’র কচ্চি!

 ঔষধের শিশিটা হাতে করিতে পাইয়া হরিচরণের হঠাৎ ভরসা হইয়াছিল, বোধ করি ফাঁড়াটা আজিকার মত কাটিয়া গেল। কিন্ত এই ‘মুখে দিবার কিছু’র প্রশ্নে তাহা উবিয়া গেল। সে নিরুপায়ের মত এদিকে ওদিকে চাহিয়া করুণ কণ্ঠে বলিল, কোথাও কিছু নেই যে খুড়ীমা!

 না আনলে কোথাও কিছু কি উড়ে আসবে রে?

 সিদ্ধেশ্বরী রাগ করিয়া বলিলেন, ও কোথায় কি পাবে যে দেবে? এসব কি পুরুষমানুষের কাজ? শৈলর যত শাসন এই ছেলেদের ওপরে। নীলিকে বলে যেতে পারিস নি? সে মুখপোড়া মেয়ে তুই আসা পর্যন্ত এ ঘর একবার মাড়ায় না―একবার চেয়ে দেখে না; মা মরচে কি বেঁচে আছে।

 সে কি ছিল দিদি, সে আমার সঙ্গে পটলডাঙ্গায় গিয়েছিল যে।

 কেন গেল? কোন্‌ হিসেবে তুই ভাকে সঙ্গে নিয়ে গেলি? দে, হরিচরণ, তুই ওষুধ ঢেলে দে―আমি অমনি খাব, বলিয়া সিদ্ধেশ্বরী অনুপস্থিত কন্যার উপর সমস্ত দোষটা চাপাইয়া দিয়া ঔষধের জন্য হাত বাড়াইলেন।

 একটু থাম হরি, আমি আনচি, বলিয়া শৈল ঘর হইতে বাহির হইয়া গেল!


দুই

হরিশের স্ত্রী নয়নতারা বিদেশে থাকিয়া বেশ একটু সাহেবিয়ানা