পাতা:নেপালে বঙ্গনারী - হেমলতা দেবী.pdf/১২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯০
নেপালে বঙ্গনারী।

বৈদ্যের শরীরের চর্ম্ম উন্মোচন করিয়া জীবিতাবস্থায় তাহার হৃদ্ যন্ত্র বাহির করিয়া ফেলা হইল কিন্তু এত অত্যাচারেও কেহ ভীমসেন থাপার বিরুদ্ধে এক অক্ষরও উচ্চারণ করিল না।

 রাজা স্বচক্ষে এই সকল অমানুষিক অত্যাচার দর্শন করিতেন। মহারাজ রাজেন্দ্র বিক্রম সাহের দুইটী মহিষী ছিল। জ্যেষ্ঠার— গর্ভে তিন পুত্র, তন্মধ্যে কনিষ্টটির হত্যা হওয়াতে এই সকল পৈশাচিক কাণ্ডের অভিনয় হয়। কনিষ্টা মহিষীর দূইটী পুত্র ছিল। জ্যেষ্ঠা মহারাণী পাঁড়েদিগের পক্ষপাতিনী, কনিষ্ঠা থাপাদিগের। ভীমসেনের প্রতি এই সকল অত্যাচার লইয়া কনিষ্ঠা মহারাণী মহারাজকে অনেক অনুযোগ করিয়াছিলেন এবং তাহার চেষ্টায় কিছুদিনের জন্য ভীমসেন থাপাকে অব্যাহতি দেওয়া হইল। দুই বৎসর পরে ১৮৩৯ খৃষ্টাব্দে দামোদর পাঁড়ের পুত্র রণজিৎ পাঁড়ে তদানীন্তন রাজমন্ত্রী হইয়া ভীমসেনের প্রতি এই হত্যার অভিযোগ আনয়ন করেন। পুনরায় অনেক প্রকার অত্যাচারের সূত্রপাত হইল। যন্ত্রণা সহ্য করিতে অপারক হইয়া ভীমসেন আত্মহত্যা করিতে প্রয়াস পান এবং স্বীয় খুকরির আঘাতে প্রাণত্যাগ করেন। যে ভীমসেন থাপা নেপালরাজ্যের অশেষ প্রকার কল্যাণসাধন করিয়াছিলেন, যিনি এক সময়ে নেপালের দোর্দ্দণ্ড ও প্রতাপান্বিত রাজমন্ত্রী ছিলেন, তাঁহার মৃতদেহের অবমাননা করিতে শত্রুগণ কুণ্ঠিত হইল না। ভীমসেনের মৃতদেহ রাজপথে নিক্ষিপ্ত হইয়া শৃগাল কুকুরের ভক্ষ্য হইল। জ্যেষ্ঠা মহারাণী