পাতা:পঞ্চরাত্র - গুরুবন্ধু ভট্টাচার্য্য.pdf/৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
পঞ্চরাত্র

 প্রথম। ধিক্, ধিক্, তুমি যে ব্রাহ্মণসুলভ চপলতা দেখালে দেখছি!

 কনকময় এই সুন্দর যূপটি দেখে বোধ হচ্ছে যেন দেবী বসুধা একটি সুবর্ণময় ভুজ তুলে রেখেছেন। দ্বিজ যেমন স্বীয় পার্শ্বে শূদ্রের[১] উপস্থিতি সহ্য কত্তে পারেন না, তদ্রূপ যজ্ঞবেদিকার অগ্নিও পার্শ্বে লৌকিকাগ্নি সহ্য কত্তে পারে না। ঐ দেখ হরিত কুশে আস্তীর্ণ থাকাতে যজ্ঞবেদীর পৃষ্ঠদেশ সমধিক দগ্ধ হতে পারে নাই। আর গজ যেমন প্রফুল্প পদ্মবনে (সরোবরে) প্রবেশ করে, এই ধূমও সেইরূপ যজ্ঞগৃহের পুরোবর্ত্তী গৃহে প্রবেশ কচ্ছে।

 দ্বিতীয়। কুল কলঙ্কিত হলে জ্ঞাতি যেমন জ্ঞাতি ভয়ে স্থানান্তরিত হয়, সেরূপ অগ্নিতাপে নিপীড়িত দ্বিজগণ অগ্নি-ভয়েই অগ্নিকে স্থানান্তরিত কচ্ছেন।[২]

 তৃতীয়। অপত্যনাশে শোকার্ত্তা নারী যেরূপ পুত্রের প্রতি স্নেহ বশতঃ শোকানলে দগ্ধ হয়, সেরূপ ঘূতপরিপূর্ণ (যজ্ঞীয়) ক্ষুদ্র শকটখানিতে জল সিঞ্চন করা সত্ত্বেও সদ্য ঘৃতে (স্নেহ) আগুন ধরেছে বলে জ্বলে যাচ্ছে।


  1. “পার্শ্বে বৃষলং ন সহতে” —বৃষল শব্দ ঐতিহাসিকের পক্ষে এ স্থলে বড়ই মূল্যবান।
  2. “জ্ঞাতি জ্ঞাতিভয়াদিব” পাঠ আছে। ‘জ্ঞাতি-ভয়’ শব্দের গূঢ় অর্থ আছে—সম্পত্তির উত্তরাধিকারিত্ব লইয়া গোলযোগ।