পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৩১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

এবং যতদিন না মত পরিবর্ত্তন করিয়া পুলিশ গোয়েন্দা হইতেছি ততদিন সরকার আমাকে সন্দেহের চক্ষেই দেখিবেন এবং ইহা খুব সম্ভব যে, এই সকল গোয়েন্দা আমাকে প্রতি পদক্ষেপে অনুসরণ করিয়া আমার জীবন দুর্ব্বিসহ করিয়া তুলিবে।

 সুইট্‌জারল্যাণ্ডে শুধু বৃটিশ গোয়েন্দা নাই, তথায় বৃটিশ সরকার কর্ত্তৃক নিযুক্ত সুইস, ইটালীয়, ফরাসী, জার্ম্মান ও ভারতীয় গোয়েন্দা আছে এবং কোনও কোনও উগ্র উৎসাহী গোয়েন্দা, আমাকে যে সরকারের কাছে গভীর কালিমাময় করিবার জন্য মিথ্যা ঘটনার সুবিস্তৃত বর্ণনা দিবে না, তাহারই বা প্রমাণ কি? আমি গত বৎসর মিষ্টার লোম্যানকে বলিয়াছিলাম, গোয়েন্দা বিভাগ ইচ্ছা করিলে যে কোন লোকের বিরুদ্ধে কতকগুলি মিথ্যা অভিযোগ উপস্থিত করিয়া তাহাকে কোনরূপ অর্ডিনান্সে বন্দী করিয়া রাখিবার ব্যবস্থা করিতে পারে। ইউরোপ হইতে এরূপ করা আরও সহজ। বিদেশে যাঁহাদিগকে সন্দেহের চক্ষুতে দেখা হইত, তাঁহাদের ভারতে ফিরিতে কিরূপ অসুবিধা ভোগ করিতে হইয়াছে, তাহা সকলেই অবগত আছেন। বিলাতের পার্লামেণ্টের ও মন্ত্রী-সভার কয়েকজন বিশিষ্ট সদস্য বিশেষভাবে চেষ্টা না করিলে লালা লাজপৎ রায়ের ন্যায় নেতাও দেশে ফিরিতে পারিতেন না। সরকার যখন আমাকে একবার সন্দেহের চক্ষুতে দেখিয়াছেন, তখন আমার ভবিষ্যৎ অবস্থা কিরূপ হইবে সহজেই অনুমান করা যায়।

 আমি জানি, পুলিসের গোয়েন্দারা এ বিষয়ে একটু অধিক কার্য্যতৎপরতা দেখাইয়া থাকেন। আমি ইউরোপে যত শান্তভাবে এবং সাবধানতার সহিত বাস করি না কেন, তাঁহারা ভারত সরকারের নিকট আমার বিরুদ্ধে অন্যায় বিপোর্ট পাঠাইবেন, আমি কিছু না করিলেও এবং খুব শান্তভাবে থাকিলেও তাঁহারা আমাকে ভীষণ ষড়যন্ত্রের কর্ত্তা বলিয়া রিপোর্ট দিবেন, তাঁহারা কি রিপোর্ট

২৯০