পাতা:পত্রাবলী (১৯১২-১৯৩২) - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রাঁচি
রবিবার

পরম পূজনীয়া
শ্রীমতী মাতাঠাকুরাণী
শ্রীচরণেষু—
মা,

 অনেকদিন হইল কলিকাতার কোন সংবাদ পাই নাই—আশা করি আপনারা সকলে ভাল আছেন—বােধ হয় সময়াভাবে পত্র দিতে পারেন নাই।

 মেজদাদা কি রকম পরীক্ষা দিলেন। আপনি কি আমার চিঠির সমস্তটা পড়িয়াছেন? যদি না পড়িয়া থাকেন, তবে আমি বড় দুঃখিত হইব।

 মা, আমার মনে হয় এ যুগে দুঃখিনী ভারত মাতার কি একজন স্বার্থত্যাগী সন্তান নাই—মা কি প্রকৃতই এত হতভাগ্যা! হায়! কোথায় সেই প্রাচীন যুগ! কোথায় সেই আর্য্যবীরকুল যাঁহারা ভারতমাতার সেবার জন্য হেলায় এই অমূল্য মানব জীবনটা উৎসর্গ করিতেন।

 মা, আপনি ত মা, আপনি কি শুধু আমাদের মা? না মা আপনি ভারতবাসী মাত্রেরই মা—ভারতবাসী যদি আপনার সন্তান হয় তবে সন্তানদের কষ্ট দেখিলে মা’র প্রাণ কি কাঁদিয়া উঠে না? মা’র প্রাণ কি এতটা নিষ্ঠুর? না, কখনই হইতে পারে না—মা ত কখনও নিষ্ঠুর হইতে পারেন না। তবে সন্তানদের এই শােচনীয় দুরবস্থার সময়ে মা কি করিয়া স্থির হইয়া বসিয়া আছেন! মা, আপনি ত ভারতের সর্ব্বত্র ভ্রমণ করিয়াছেন—ভারতবাসীর অবস্থা দেখিলে এবং তাহাদের দুরবস্থার কথা ভাবিলে আপনার প্রাণ কি কাঁদে না? আমরা মূর্খ—আমরা স্বার্থপর হইতে পারি

১৯