পাতা:পরাধীন প্রেম - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

থেকে কাম্পতাকে ফাস্ট হতে দিয়েছে এবং কাকতাও যেভাবে প্রেমিকের উপহারের মতই অনায়াসে খশি মনে সেটা গ্রহণ করেছে তা থেকে কাম্পতার জীবনের এমন গারতের দিকটা কি অনামান করে নিতে কথািট হয় ! বিশেষ বন্ধ তার পক্ষে তো কািন্টকর নয়ই, আরও অনেকেই ব্যাপারটা অনমান করতে পেরেছে। অনিলদের বাড়িতে বেশ কিছদিন ধরে একটা আতঙ্কের ভাব সম্মিটি হয়ে আছে -“কিবে অনিল একটা বে-জাতের বে-ঘরের মেয়েকে বিয়ে করে বসে ! অনিল হয়তো একটা চাকরি হবার অপেক্ষায় আছে । তারপর কি হবে কে জানে! কিন্ত বিনয় জানে, ওরকম কোন পরিকল্পনা অনিলের মগজে নেই। সে এগোয় না, কান্তাও শােধ মেলামেশা বজায় রেখে চলে, তাকে টানবার কোন চেন্টাই করে না । কাম্পত একটি সক্রিয় হলে আনিলের ধৈয্যের বাঁধ ভেঙ্গে পড়বে সন্দেহ নেই। বাড়ির লোকের চিন্তা বা নিজের সংস্কার কিছই তাকে ঠেকিয়ে রাখতে পারবে না । কিত বিনয় জানে কোন অসাধারণ কারণে চেতনায় একটা ওলট-পালট ঘটে না গেলে কাম্পতা কোনদিনই তা পারবে না । প্রেমকে সার্থক করতে, প্রেমিকের জড়তা ভেঙ্গে দিয়ে তাকে কাছে টানতে যেটােক উদকানি দেওয়া কোন মেয়ের পক্ষে কিছমাত্র লাজা বা অপমানের ব্যাপার নয়, অশোভন আচরণও নয়। --সেট কুও কান্তার মধ্যে কুলোবে না । কান্ত বোধহয় জানেও না যে অনিলের ভুল আর বোকামিকে নিবিচারে মেনে নেওয়া তারও কত বড় ভুল এবং বোকামি ! মাঝে মাঝে বিনয়ের রাগ হয় । ইচছা হয়, দ’জনকে সব বঝিয়ে বলে । কিন্ত এটাও সে জানে যে তার উপদেশে ফল হবে না । ওই প্রসঙ্গ তোলারও তার উপায় নেই { ভালবাসার কথাই দ’জনে অস্বীকার করবে ! বকুল এসে প্ৰণাম করে দাঁড়ায় । তার দিকে চেয়েই বিনয় চমকে ওঠে ! তার বিধবা বেশ দেখে নয়, তাকে দেখে । বাইরের বেশে নয়, তার নিজের দেহে এতখানি পরিবর্তন, এতখানি বিস্ময়কর নন্তনত্ব নিয়ে সে এসেছে যে বিস্ময়ে বিনয় অবাক হয়ে চেয়ে রইল। মাখের দিকে, বকুলের দেহের দিকে চেয়েই মনে হল, এ তো সে বকুল নয় ! সেই চণ্ডলা পাহাড়ী ঝরণার মত লীলায়িতা বকুল যেন এই স্থিরা, ভদ্রের কালে কলে ভরা নদীর মত অচাঞ্চলা বকুলের মাঝে কোথায় আত্মগোপন করেছে । সে ছিল শিল্পীর অসমাপত চিত্রের মত অসম্পৰ্ণ, কিন্ত এই দ’বছরে শিল্পী যেন কখন তার চিত্রটি সমাপত করে গেছে । কোথাও রেখার অসম্পপণতা নেই, রঙের বেমানান ছোপ নেই। মাগশিশর মত তার চঞ্চল উৎসকে দস্টি পযািত গভীর হয়ে এসেছে। গালের পশিষ্টতার ঔজ্জবল্য সমস্ত মাখে। সৌন্দয্যের জ্যোতি ছড়িয়ে দিয়েছে। দেহের আগাগোড়া যেন কোন নিপািণ ভাঙ্কির পরম যত্নে নাতন করে গড়ে দিয়েছে { তার ফিল্মিত দণ্টি লক্ষ্য করে বকুল বলে, কি দেখহু বিনয়ন্দা ? আমার নাতন রূপে ? মানিয়েছে ? SR