পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (তৃতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/১১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

't পূর্ববঙ্গ গীতিকা চুরি করিয়া লইয়া যায়। সুতরাং এই ঐতিহাসিক পুস্তকে ভোলা ‘চাের ' সওদাগর’ নামে অভিহিত হইয়াছে । চোর সওদাগরের সঙ্গে অ্যামিরের যুদ্ধের বিস্তৃত বিবরণ তারিখী হামিদিতে পাওয়া যায়। পূৰ্ণচন্দ্ৰ চৌধুরী নামক এক লেখক এই গানটির ঐতিহাসিক ব্যাপার-সম্বন্ধে কতকগুলি তথ্য জানাইয়াছেন। তিনিও উল্লেখ করিয়াছেন যে ঘটনাটি নাসরত শাহেরু, আমলে সংঘটিত হইয়াছিল এবং ভোলা সওদাগরের পরাজয়-চিহ্নস্বরূপ ভেলুয়ার দীঘি খাত হইয়াছিল। তিনি মাণিক সওদাগরকে ‘আড়াইচাঁদ’ নামে পরিচিত করিয়াছেন এবং যদিও ঐতিহাসিক ঘটনাটির কথা যথাযথারূপে লিপিবদ্ধ করিয়াছেন, তথাপি তাহার কয়েকটি অদ্ভুত মত আমাদিগকে বিস্মিত করিয়াছে। তঁহার অনুমান এই ‘আড়াইচাঁদ’_এবং প্রখ্যাতনামা_চাদ সওদাগর এক ব্যক্তি এবং ভাসানগানের বেহুলা ও এই কাব্যোক্ত - ভেলুয়া – অভিন্ন চরিত্র। অতি প্রাচীন যুগের_আলৌকিক উপাখ্যানটিকে তিনি ষোড়শ শতাব্দীতে টানিয়া আনিয়াছেন। পূৰ্ণবাবুর এই সব ঐতিহাসিক মন্তব্যের কোনও মূল্য নাই। তবে তল্লিখিত ঘটনা এবং হামিদুল্লাখার তারিখ হামিদির আখ্যানবস্তু মূলতঃ এক । সুতরাং [এই বহুজন কথিত ভেলুয়ার পালাটি যে ঐতিহাসিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত তৎসম্বন্ধে কোন সন্দেহ নাই । আমরা পূর্বেই লিখিয়াছি যে গ্ৰন্থবর্ণিত সমস্ত ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে যে ভৌগোলিক তথ্য প্রদত্ত হইয়াছে, তাহাতেও এই পল্লীগীতিকার ঐতিহাসিকত্ব প্রতীয়মান তইতেছে । v^এই পালাটি মুসলমান রমণীরা বিবাহবােসরে গাহিয়া থাকেন। এই ধরণের গানগুলি পল্লীর মুসলমান-মহিলা-সমাজে “গৃহ’ল|” গান নামে পরিচিত। এই শব্দটি বোধ হয় ‘সুহাল’ শব্দ হইতে আসিয়াছে। স্বাধা রমণীগণের কথা বিবাহবাসরে চট্টগ্রামের মুসলমান সম্প্রদায়ের রমণীরা এখনও গাহিয়া থাকেন এবং এই গীতোক্ত বিষয়টিব সঙ্গে বিবাহবাসরের সঙ্গতি-সম্বন্ধে কাহারও দ্বিধা থাকিতে পারে না । </এই গান চট্টগ্রাম প্রভৃতি অঞ্চলে যে , কত বিচিত্র অবয়বে পল্লীতে পল্লীতে প্ৰচলিত আছে তাহার অবধি নাই । গ্ৰিয়াসন সাহের নোয়াখালি জেলার কথিত ভাষার নিদৰ্শন-স্বরূপ এই পালাগানটির কোন একটি সংস্করণ