পাতা:পুর্ব্ববঙ্গ গীতিকা (তৃতীয় খণ্ড) - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূমিকা চৌধুরীর লড়াই প্ৰায় দেড়শত বর্ষ যাবৎ নোয়াখালি ও চট্টগ্রাম জেলার নিম্নশ্রেণীর লোকেরা গাহিয়া আসিতেছে। ইহার প্রধান গায়ক ও শ্রোতা মুসলমান সম্প্রদায়। এই গান দীর্ঘকাল যাবৎ গীত হওয়ার দরুন কতকটা ভাষান্তরিত হইয়াছে সন্দেহ নাই । বৰ্ত্তমান সংস্করণ চাষীদের নিকট হইতে সংগৃহীত হইয়াছে এবং এই জন্য ইহার ভাষা অনেকটা আদিত গানের মতই আছে। আমরা পূর্বে পূর্বে অনেকবার লিখিয়াছি, যেখানে কোন পাঠশালা হইতে সদ্যোনিস্ক্রান্ত গ্ৰাম্য পণ্ডিত গ্ৰন্থকারের যশোলাভ করিতে ব্যস্ততা দেখাইয়াছেন, সেখানেই পালাগান হাতে পাইলে তিনি নিজের বিদ্যাবুদ্ধি দেখাইবার লোভ সংবরণ করিতে পারেন নাই । এই সকল প্ৰকাশকেরা ভারতচন্দ্রের বিদ্যাসুন্দরাদি পুস্তক ভাল করিয়া বুঝিতে না পারিলেও ঐ সকল পুস্তকের অশ্লীলাংশ গ্ৰহণ করিয়া প্ৰাচীন পালাগানকে হৃদয়গ্ৰাহী করিবার চেষ্টার কিছুমাত্র কলুর করেন নাই। আসাদিয়া গ্রামের বছনিয়া সেখ। এই পালাগানের মৌলিকত্বের দাবী করেন। “সারগীত’ তিনিই প্ৰকাশ করিয়াছিলেন বলিয়া উল্লেখ করিয়াছেন । ইয়াকুব আলী নামক অপর এক ব্যক্তি এই গানের আর একটি সংস্করণ প্রণয়ন করেন। ইঙ্গাদের মধ্যে কে গানের রচয়িত তাহা ঠিক করা কঠিন। অনেক সময়ে পালা গায়কেরা নিজেদের ভণিতা বসাইয়া দিয়া কাব্যযশ নিজস্ব কারতে চেষ্টা পাইয়া থাকেন। কবির নাম ধীরে ধীরে বিস্মৃতির গহবরে নিমগ্ন হইয়া যায়। যদিও অনেকেই এই পালাগান প্ৰকাশ করিয়াছিলেন, তথাপি ইয়নস নামক জনৈক প্ৰকাশক এই পালাটির দরুন বিশেষ বিপদগ্ৰস্ত হইয়াছিলেন। তিনি সম্ভবতঃ ভারতচন্দ্রের বিদ্যাসুন্দর পাঠ করিয়া পাণ্ডিত্য প্রদর্শন করিয়াছিলেন। তদ্রুনাই তাহার বিপদ। প্রায় ত্ৰিশ বৎসর পূর্বে ইয়নস মিঞা পুস্তকখানি প্ৰকাশ করিয়াছিলেন, তাহাতে সমস্ত পালাগানটি ছিল না। গানটি সপ্তাঙ্ক এবং প্রায় তিনহাজার ছত্রে সম্পূর্ণ। ইয়নস মাত্র তৃতীয়াঙ্ক পৰ্য্যন্ত প্ৰকাশ করিয়াছিলেন। এই তিন অঙ্কের উপর তিনি তাহার পাণ্ডিত্যের অনেকটা দৌড় দেখাইয়াছিলেন। অশ্লীল পুস্তক মুদ্রণ ও প্রকাশের অপরাধে দণ্ডবিধি 22