পাতা:পোকা-মাকড়.pdf/১১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৯৮
পোকা-মাকড়

পেশীতে খবর পাঠানো হয় এবং সেই খবর জানিয়া জোঁকেরা নড়াচড়া করে। দেশে অনেক টেলিগ্রাফ আফিস্ থাকিলে সকলের উপরে একটা হেড আফিস্ রাখা হয়। জোঁকের শরীরের স্নায়ু দিয়া যে টেলিগ্রাফ চলে তাহারো একটা হেড-আফিস্ আছে। জোঁকেরা মাথায় কতকগুলি স্নায়ুর সূতা তাল পাকাইয়া হেড্ আফিসের সৃষ্টি করিয়াছে। বড় বড় প্রাণীদের মাথায় যে মস্তিষ্ক আছে ইহা তাহারি অঙ্কুর।

 যাহা হউক, মাথার হেড আফিস্ ছোট ছোট আফিস্‌গুলিতে হুকুম চালায় এবং ছোট আফিস্ সেই হুকুম সর্ব্বত্র প্রচার করে। কিন্তু তাই বলিয়া ছোট আফিস্‌গুলি একেবারে পরাধীন নয়। দরকার হইলে হেড আফিসের হুকুম না লইয়াই তাহারা স্নায়ুর উপরে নিজেদের হুকুম চালায়। ছুরি দিয়া যদি জোঁকের দেহ দুই ভাগে ভাগ করা যায়, তবে লেজের অংশ মাথার অংশ হইতে পৃথক হইয়াও কিছুক্ষণ নড়চড়া করে। লেজের অংশে জায়গায় জায়গায় যে স্নায়ুর গাঁট আছে, তাহাই হুকুম চালাইয়া লেজ নাড়ায়। এই জন্য মস্তিষ্কশূন্য হইয়াও জোঁকেরা কিছুক্ষণ জীবিত থাকে।

 স্নায়ুর গাঁটের এই কাজটা কেঁচো হইতে আরম্ভ করিয়া উই, পিঁপ্‌ড়ে, মশা, মাছি প্রভৃতি অনেক প্রাণীতেই দেখা যায়। কেঁচো ও জোঁকের শরীরে ইহার আরম্ভ-মাত্র হইয়াছে। প্রাণীরা যেমন ধাপে ধাপে উন্নত হইয়া পড়িয়াছে, ইহাদের শরীরের স্নায়ুর কাজও তেমনি সুন্দর হইয়াছে।