পাতা:প্রবন্ধ পুস্তক-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১২২ প্রাচীন ভারতবর্ষের রাজনীতি । তাহাৰু কন্যা বিবাহ করিয়াছিলেন। (হিন্দু হইয়া ঠিক বিবাছ করিয়াছিলেন এমতও বোধ হয় না—) ইতিহাসে তিনজন সাম্রাজ্যনিৰ্ম্মাতা বিশেষ পরিচিত-শাল মান, দ্বিতীয় ফুেডে রিক, প্রথম পিটর-ভবিষ্যতে বিস্মার্ক সেই শ্রেণীতে স্থান পাইবেন কি না বলা যায় না, কেন না তাহার কীৰ্ত্তি স্থায়ী কি না তাহ এখনও জানা যায় নাই। আলেকৃজগুর, নাপোলিয়ন, বা ক্রম্বেল সে শ্রেণীমধ্যে আসন পান নাই, কেন না তাহাদের কীর্তি তাহদের মৃত্যু পৰ্য্যন্ত স্থায়ী, বা তাহাও নহে। গজননী মহম্মদের প্রায় সেই রূপ। আরবসাম্রাজ্য ও মোগল সাম্রাজ্য এক এক জনের নিৰ্ম্মিত নহে। কিন্তু মাগধ সাম্রাজ্য এক চন্দ্রগুপ্তের নিৰ্ম্মিত। এবং পুরুষানুক্রমে স্থায়ী বটে। তিনি শালমান, ফুেডরিক ও পিটরের সঙ্গে উচ্চাসনে বসিতে পারেন । নারদের যে উপদেশবাক্যের কথার উল্লেখ করিয়াছি, তাহাতে এমত তত্ত্ব অনেক আছে, যে রাজনীতিবিশারদ ইংরেজেরাও তাঁহা গ্রহণ করিয়া তদনুসারে চলিলে, তাহাদিগের উপকার হয়। এমত কদাচ বক্তব্য নহে যে হিন্দুরা এই সকল নৈতিক উক্তির অনুসারী হইয়! সৰ্ব্বত্ৰ সৰ্ব্ব প্রকারে চলিতেন । কিন্তু ঈদৃশ নৈতিকতত্ত্ব যে তাহাদিগের দ্বারা উদ্ভূত হইয়াছিল, ইহা অল্প প্রশংসার কথা নছে। যেখানে উদ্ভূত হইয়াছিল, সেখানে যে উহা কিয়দংশে কার্য্যে পরিণত হইয়াছিল, তদ্বিষয়ে সংশয় করা অন্যায়। প্রাচীন ভারতবর্ষে রাজনীতির কতদূর উন্নতি হইয়াছিল,তাহার কিঞ্চিৎ আলোচনা করিলে ক্ষতি নাই। এজন্য আমরা উল্লিখিত নারদবাক্য হইভে কিঞ্চিৎ উদ্ধ ত করিব। ঐ কথা পাঠকেরা অনেকেই পড়িয়াছেন,ভথাপি উহার পুনঃপাঠে কষ্ট বোধ হইবে, এমন বিবেচনা হয় না।