পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৬৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

હર8 প্রবাসী—ফাঙ্কন, ১৩৩৮ ৩১শ ভাগ, ২য় খণ্ড তদ্ধিত প্রত্যয় লোপ করিয়া। কুরুর পুত্র কম্বুজীয়ের উত্তরাধিকারী দারয়বে কুরুর জ্ঞাতি বিষ্টাম্পের ( Hystaspes ) পুত্র ছিলেন, কিন্তু তাহার পূর্বপুরুষগণের মধ্যে কাহারও কম্বুজীয় নাম দেখা যায় না। পারসীক রাজবংশের দুই শাখার আদি পুরুষ ছিলেন হখামনিম ( Achaemenes ) । হখামনিষের নাম হইতে গ্ৰীক-লেখকের এই বংশকে একিমিনিডবলিতেন । অনুমান হয় খৃঃ পূঃ দ্বিতীয় শতাকে পার্থব বা পহুলবগণ কত্ত্বক পারস্ব-বিজয়ের পূর্ব পর্য্যন্ত হিন্দু-লেখকের পারস্ত দেশকেই কম্বোজ নামে অভিহিত করিতেন। পাণিনির সুত্রে যেভাবে কম্বোজ শব্দের বিভিন্ন অর্থের উল্লেখ আছে তাহাতে অল্পমান হয় পাণিনি কম্বুৰ্জীয়ের পুত্র কুরুর এবং কুরুর পুত্র কম্বুজীয়ের সমসময়ে অথবা অল্পকাল পরে ব্যাকরণ রচনা করিয়াছিলেন । পাণিনির ৪।১।১৯ স্বত্রে বিহিত হইয়াছে, ঘবন+আমুক +ঙীষ - যবনানী। কাত্যায়ন এই স্থত্রের একটি বাপ্তিকে বলিয়াছেন, লিপি অর্থে ঘবনানী শব্দ ব্যবহৃত হয়, অর্থাৎ পাণিনি গ্রীক-লিপির সহিত পরিচিত ছিলেন। হেকির্মী চিকিৎসা এখনও ইউনানী বা যবনানী নামে কথিত হয় । ইউরোপীয় পণ্ডিতেরা পাণিনিকে এত প্রাচীন মনে করেন ন। কিন্তু কেহই তাহাকে খৃ: পূ: ৩৫০ সালের পরে ফেলিতে প্রস্তুত নহেন। পাণিনি যদি খৃঃ পূঃ ষষ্ঠ শতাব্দীর শেষভাগের পরিবর্তে খৃঃ পূঃ চতুর্থ শতাব্দীর প্রথম ভাগে প্রত্নভূত হইয় থাকেন, তাহার পূৰ্ব্বেগু ৰে গান্ধীর দেশীয় হিন্দু পণ্ডিতের কম্বোজ এবং ঘবনগণ সম্বন্ধে অনেক খবর রাপিতেন এরূপ অল্পমান কর। যাইতে পারে। পূৰ্ব্বাবধি বিভিন্ন অর্থে প্রচলিত কম্বোজ শব্দ, এবং বিশেষ অর্থে & প্রচলিত ষবনের স্ত্রীলিঙ্গ যবনানী শব্দ সিদ্ধ করিবার জন্তই পাণিনি স্বত্র রচনা করিয়া গিয়াছেন। পাণিনি যে সময়ের লোকই হউন, কম্বোজ নামের স্থষ্টি হইয়াছিল খুব সম্ভব কম্বুজীয়ের পুত্র কুরুর সময়ে। যবনানী শব্দ তদপেক্ষাও প্রাচীন হইতে পারে। অতএব এশিয়ার পঞ্চিম খণ্ডের খৃঃ পূঃ ষষ্ঠ শতাব্দীর ইতিহাসের আলোচনা করিলে বুঝিতে পারা যায়, এই শতাব্দীর প্রথমার্থে হিন্দুর এবং গ্রীকের মধ্যে বিদ্যার আদান-প্রদানের বাধা ছিল না, এবং শেষার্থে কম্বুজীয়ের পুত্র কুরু যখন সপ্তগো এবং গন্ধার হইতে যবন দেশ(Ionia) পৰ্য্যন্ত বিস্তুত একচ্ছত্র সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত করিয়াছিলেন, তপন উভয় প্রাস্তের তত্ত্বজিজ্ঞামুদিগের মধ্যে তত্ত্ব কথার আদান-প্রদানের ষথেষ্ট স্ববিধ হইয়াছিল। সেকালের অনেক ধবনই অবশ্য ফার্সি ভাষা শিখিতেন এবং অনেক পাস গ্ৰীক ভাযায় কথোপকথন করিতে পারিতেন । সংস্কৃত ভাযার সহিত একিমিনিড নৃপতিগণের শিলালিপির ফাসির সাদৃঙ্গ এত বেশী যে পাসি দোভাষী মধ্যবৰ্ত্তী করিয়া হিন্দু-যুবনে কথাবাৰ্ত্তার কোন অসুবিধা হইতে পারিত না। কিন্তু প্রকৃতপ্রস্তাবে তৎকালে হিন্দুর এবং গ্রীকের মধ্যে দার্শনিক মতামতের আদান-প্রদান চলিয়াছিল কি-না তাহ। নিরূপণ করিতে হইলে, প্রধানতঃ বিচার করিতে হইবে হিন্দু-দশনের এবং গ্রীক-দৰ্শনের জটিল সিদ্ধান্তগুলির মধ্যে কোন সাদৃষ্ঠা আছে কি-না। যদি থাকে, তবে স্বীকার করিতেই হুইবে এই সাদৃশ্বের কারণ স্বতন্ত্র উদ্ভাবন নহে ; এক দেশ হইতে আর এক দেশে বিদ্যার বিস্তৃতি এই সাদৃশ্বের কারণ ।