পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লোরো য়োংরাং-এর কাহিনী ঐ সংগ্রাহক ঘবৰীপ বা জাভার সর্বত্র হিন্দু সভ্যতার চিহ্ন বিদ্যমান । হিন্দুবৌদ্ধ ধর্শ্বের, হিন্দু সাহিত্যের এবং হিন্দু স্থাপত্য ও ভাস্কর্ধ্যের পরিচয় সৰ্ব্বত্রই পাওয়া যায়। প্রাস্বানন নামক প্রাচীন নগরে বিস্তর শৈব ও বৌদ্ধ মন্দির ছিল। এখনও তাহাদের ধ্বংসাবশেষ দৃষ্ট হয়। তাহার নিকটে চাওঁী সেৰু নামক স্থানে আড়াই শতের অধিক মন্দির আছে। চাণ্ডী সেবুর অর্থ “সহস্র মন্দির।” এইগুলির মধ্যে একটির নাম “শ্ৰী লোরো য়োংরাং”-এর মন্দির। আমাদের নামের গোড়ায় আমরা যেমন শ্ৰী ব্যবহার করি, জাভাতেও হয়ত আগে সেইরূপ হইত। “লোরো” শব্দের অর্থ *অবিবাহিতা”। আমাদের দেশে এখনও অনেক লোক আছে, যাহারা বিশ্বাস করে আট নয় দশ বৎসর বয়সের মধ্যে কন্যার বিবাহ না দিলে চৌদ্ধ পুরুষ নরকস্থ হয় । জাভাতেও এই রকম একটা বিশ্বাস ছিল । কিন্তু , সে বিশ্বাস পূৰ্ব্বপুরুষদিগকে নরকে পাঠাইত না, যে-বালিকা আঠার উনিশ বৎসর বয়সেও বিবাহ করিতে রাজী হইত না, তাহাকে পাষাণে পরিণত করিত। ঐ লোরো য়োংরাং-এর মন্দিরের সহিত এখনও এইরূপ একটি কুসংস্কারের কাহিনী জড়িত আছে। তাহাই বলিব পুরাকালে যবৰীপে রাতু বোকো নামক এক রাজা মাতরম্ রাজ্যের অধিপতি ছিলেন। তাহার একটি মাত্র সন্তান ছিল। সেটি কন্যা । স্বতিকাগারেই তাহার মাতার মৃত্যু হয়। কস্তাটির নাম তিনি ঐ য়োংরাং রাখেন। কস্তাটি মায়ের মতই রূপসী ছিল। তাহাকে দেখিয়া রাতু বোকোর তাহার মহিষীকে মনে পড়িত। মহিষীর প্রতি র্তাহার প্রেম এবং কন্যার প্রতি স্নেহের আতিশষ্য বশত: তিনি কস্তাটির সামান্ত অভিলাষও অপূর্ণ রাখিতেন না। পিতার এইরূপ আদরে, বালিকার, বিশেষতঃ রাজকুমারীরা, যতটা স্বাধীনতা পাইত, য়োংরাং তার চেয়ে অনেক বেশী স্বাধীনতা . সম্ভোগ করিত। এই কারণে, য়োংরাং এত বেশী স্বাধীনচিত্ত হইয়া উঠিল, যে, তাহার শিক্ষকেরা উৰিয় হইয়া উঠিলেন। যথাকালে রাজমন্ত্রীর নিকটবর্তী রাজ্যসমূহের রাজপুত্রদের মধ্যে রাজকুমারী য়োংরাং-এর জন্য পাত্র অন্বেষণ করিতে লাগিলেন। তাহা শুনিতে পাইয়া য়োংরাং পিতাকে এই প্রতিজ্ঞায় আবদ্ধ করিলেন, যে, তিনি তাহার সম্মতি বাতিরেকে কাহারও সহিত বিবাহ দিবেন না। রাজনন্দিনীর পাণিপ্রার্থী হইয়া কত কত রাজকুমার রাতু বোকোর প্রাসাদে আসিতে লাগিলেন। কিন্তু কাহাকেও য়োংরাং পছন্দ করিলেন না । য়োংরাং পরমা স্বন্দরী ছিলেন বলিয়া অনেক প্রত্যাখ্যাত রাজপুত্র মৰ্ম্মাহত হইয়া নিজ নিজ পিতৃগৃহে ফিরিয়া গেলেন। কিন্তু অন্য অনেকে মনে করিলেন, যে, তাহাদিগকে অপমান করা হইয়াছে, এবং সেইজন্য র্তাহারা সাতিশয় ক্রুদ্ধ হইলেন। তাহার রাজ রাতু বোকোকে এই বলিয়া দোষ দিতে লাগিলেন, যে, কন্যাকে বিবাহ করিতে আদেশ করা তাহার উচিত ছিল। র্তাহারা ইহাতেই ক্ষাস্ত হইলেন না। অপমানের প্রতিশোধ লইবার জন্ত মাতারম্ রাজ্যের বিরুদ্ধে বড় বড় সৈন্যদল প্রেরণ করিতে লাগিলেন। তাহাতে রাতু বোকো এরূপ বিপৎসস্কুল যুদ্ধবিগ্রহে জড়িত হুইয়া পড়িলেন, যে, তাহার প্রজার অধীর হইয়া উঠিল। তাহারা একদিন প্রাসাদের সম্মুখস্থ চত্বরে সমবেত হইয়া চাহিয়া বসিল, যে, রাজা এমন কিছু করুন যাহাতে রাজকুমারীর নিজের কৰ্ত্তব্য সম্বন্ধে চেতনা হয়। লোকমতের প্রভাব অতিক্রম করিতে না পারিয়া রাতু বোকো য়োংরাংকে ভাকিয়া-পাঠাইলেন এবং তাহার চেচাঁদের সমক্ষে বলিলেন, . “আমি তোমার কাছে প্রতিজ্ঞা করিয়াছি, যে