পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯১৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৬ষ্ঠ সংখ্যা ] ইতিপূৰ্ব্বে কিন্তু বহুবার প্রায়শ্চিত্তের কথা তোলা হয়েছিল, পণ্ডিতগণ সেকথা কানেই তোলেন নি। দেখ ল যদি প্রায়শ্চিত্ত করলেই এরা সন্তুষ্ট হয় তবে তাতে আর দোষ কি ? দু-দিন পরেই মহাসমারোহে প্রায়শ্চিত্ত আরম্ভ হ’ল ; চারধারের যত পণ্ডিত সব জড় হলেন । নানা তর্কবিতর্ক অন্থস্বার বিসর্গের মধ্য দিয়ে কাজ এগিয়ে চলল। মস্তকমুগুনাদি যত রকমের শুভকৰ্ণ সব শেষ হয়েছে—এখন বাকী আছে কেবল 'গোময়-ভক্ষণ’ ! • বৃদ্ধ শিরোমণি-মশায় এক ছটাক আন্দাজ একটি গোময়ের তাল বিলাতফেরতের সামনে ধরলেন, বললেন— *আচমন ক’রে উদরসাৎ ক’রে ফেল ।” - সৰ্ব্বনাশ! বিলাতফেরতের ত চক্ষুস্থির! বললেন— *এও কি সম্ভব ।” শিরোমণি-মশায় আদেশ !” বিলাত-ফেরৎ চটে উঠল —“শাস্ত্রের कि একটা কাগুজ্ঞান নেই! এতটা গোবর কি কখন মামুষে খেতে পায়ে ?” শিরোমণি উত্তর করলেন—“মানুষে না পারুক, বিলাত-ফেরতকে পাৰ্বতেই হবে।” নব্যদলে মহাবিদ্রোহ উপস্থিত হ’ল। পণ্ডিতগণও নাছোরবান্দা। শেষে বিলাত-ফেরৎ বললে—“আচ্চা । . তাই খাব, দিন। যখন শাঙ্কের আদেশ তখন ত আর উপায় নেই!” নব্যদল চীৎকার করে উঠল—“চুলোয় যাক এমন শাস্ত্ৰ! খেয়ো না ! খেয়ে না ! কিছুতেই খেয়ো না !” বিলাত-ফেরৎ ইঙ্গিতে তাদের খামৃতে ব’লে, শিরোমণিমশায়কে বললেন—“দিন ! শিরোমণি-মশায়, গোবর निन !” শিরোম৭ি ত মহা খুলী! বললেন—“এই ত ববী, এই ত মানুষের মত কাজ ! আশীৰ্ব্বাদ বরি, শাস্ত্রে তোমার এমনি মচলা ভক্তি যেন চিঃদিন ধকে ?” বিয়াত-ফেয়ৎ বললেন, “কিন্তু শিরোমণি-মশায় ; সরি এক তাল লে চাই ।” বললেন—“তা বাবা শাস্ত্রের প্রায়শ্চিত্ত b-86: শিরোমণি জবাৰু ! বললেন—“সেকি ! আবার কেন । শাস্ত্রে ত এই এক তালেরই ব্যবস্থা করেছে ।” বিলাত-ফেরৎ জোর দিয়ে বললে—“লে আপনার ভাবতে হবে না। আপনি ঠিক এই রক্স রিএকতাল গোবর দিন ।” শিরোমণি কি করেন ! ঠিক সেই ওজনের আর এক তাল গোবর গিয়ে দিলেন । বিলাত-ফেরৎ সেই দুই তাল গোবরই মুখের কাছে এগিয়ে নিল । শিরোমণি বাধা দিয়ে চীৎকার ক’রে উঠলেন— “আহা আহা! এক ভালই খাও ! দু-তালের কোনো প্রয়োজন নেই।” বিলাত-ফেরৎ কিছু না ব'লে গোবরের তাল ছুটি মুখের কাছে ধরলে । সভাস্বদ্ধ লোক নিৰ্ব্বাক! নিস্তব্ধ! কিছুক্ষণ পরে তাল দুট নীচে নামিয়ে দিয়ে সে বললে—“নিন শিরোমণিমশায় ! গোময়-ভক্ষণ' ত হয়ে গেল।” : শিরোমণি ত হতভম্ব ! বললে—“সে কি বাবা । এক তিলও ত মুখে তোল নি ?” বিলাত-ফেরৎ বললে—“বলেন কি ঠাকুর । হয়নি ত কি ? জানেন না শাস্ত্রে বলেছে—"প্ৰাপেন অৰ্দ্ধভোজনম –তা আমার এই দুই তাল গোময়ের ভ্ৰাণ নেওয়ায় ত এক তাল ভোজন হয়েই গেছে। পণ্ডিত হয়ে. শাস্ত্রবাক্য অমান্ত করবেন না ! নিন নিন, এবার দক্ষিণেটা নিয়ে নিন।” নব্যদলও চীৎকার ক’রে উঠল—“হঁ। ই, আর গোলমাল করবেন না ; দক্ষিণা নিয়ে নিন! দাও হে দাঙ, শিরোমণি-মশায়কে দক্ষিণা দিয়ে দাও!” সেই মহা হটগোলের মধ্যে শিরোমণি-মশায়ের ক্ষীণ স্বর শোনা গেল।--1 ছা দাও, এবার দক্ষিণেটা চুকিয়ে দ:ও ! বেশ মে টা রকম পিও কিন্তু ! কারণ শ:-ধ্বই ত বলেছে—” নব্যদল বাধা দিয়ে ব’লৈ উঠল—“থক্ থক্‌ ! শাস্ত্রের কথা পরে হবে—এখন ক্ষিণেটা নিয়ে নিন।”