পাতা:প্রবাসী (একত্রিংশ ভাগ, দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৯২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আচাৰ্য্য শীলের প্রশ্নোত্তর শ্ৰীধীরেন্দ্রমোহন দত্ত, এম-এ, পিএইচ-ডি বিগত ১৩৩৭ সালের ১৫ই আশ্বিন বিজয়াদশমী দিবসে আচাৰ্য্যদেব স্যর ব্রজেন্দ্রনাথ শীল মহাশয়ের দর্শনলাভের সৌভাগ্য ঘটয়ছিল। তিনি তখন পীড়িত হইয় ভবানীপুরে উহার কন্যার গৃহে বাস করিতেছিলেন। অম্নস্থতাবশতঃ দীর্ঘকাল বাক্যালাপ করা চিকিৎসকদের নিষেধ ছিল, । মাত্র আধঘণ্টাপানেক তাহার সঙ্গে কথোপকথন হুইয়াছিল। ,争 বাংলার শ্রেষ্ঠ দার্শনিক বলিয়া ব্রজেন্দ্রনাথ শিক্ষিতসমাজে পূজিত হইয়া থাকেন। কিন্তু তাহার পাণ্ডিত্য ও প্রতিভার সম্বন্ধে স্পষ্ট ধারণ র্তাহার কতিপয় ছাত্র এবং বন্ধুবান্ধব ভিন্ন অন্ত অনেকেরই হয়ত নাই। যুগপৎ এত বহু বিষয়ে গভীর পাণ্ডিত্য একজনের থাকিতে পারে ইহা ব্রজেন্দ্রনাথকে না জানিলে বিশ্বাস করাই দুষ্কর হইত। রসায়ন, পদার্থবিজ্ঞান, শারীরবিজ্ঞান, প্রাণিবিজ্ঞান, উদ্ভিদবিজ্ঞান প্রভৃতি বিজ্ঞানের বিবিধ শাখার সম্বন্ধে তাহার ustraz sfērā sfşfą "Positive Sciences of the Hindus” গ্রন্থে কিঞ্চিৎ পাওয়া যায়। কিন্তু ইহা ছাড়া .ইংরেজী, বাংল, সংস্কৃত প্রভৃতি এবং বিভিন্ন দেশের ও .বিভিন্ন যুগের সাহিত্য, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের বহুবিধ ভাষা, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ইতিহাস, গণিত, অর্থনীতি রাষ্ট্রনীতি, সমাজবিজ্ঞান এবং সৰ্ব্বোপরি প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য দর্শন শাস্ত্রে তাহার যে অনন্তসাধারণ পাণ্ডিত্য ও প্রতিভা আছে তাহার সাক্ষ্যস্বরূপ কোন গ্রন্থ র্তাহার নাই । জাগতিক দৃষ্টিতে ইহা ভারতবর্ষের পক্ষে এক মহা পরিতাপের বিষয়। ভারতের শ্রেষ্ঠ দার্শনিকের চিন্তা ও গবেষণার ফল লিপিবদ্ধ হইলে ভারতের জ্ঞানভাণ্ডার যেমন সমৃদ্ধ হইত, জগতের দর্শন-ক্ষেত্রে ভারতের গৌরব তেমনই বৃদ্ধি পাইত। সুতরাং তাহার অসামান্ত দান হইতে বঞ্চিত হওয়া ভারতের পক্ষে একটা মহা দুর্ভাগ दजिब्रांई बहन ह्छ । - - কি কারণে তিনি দর্শন সম্বন্ধে কোন-গ্ৰন্থ লিখিলেন ন, ইহা জানার ঔংস্থক্য অনেকেরই হয়। আমার সঙ্গে প্রধানতঃ এই বিষয়ে ও অন্য কয়েকট বিষয়ের আলাপ হইয়াছিল। বাংলার এই প্রবীণ মনীষীর মতামত জানার আগ্রহ অনেকেরই আছে। সেই জন্য এই কথোপকথনটর ভাবার্থ লিপিবদ্ধ করিয়া প্রকাশ করা উচিত মনে হইল । - কথোপকথনকালে আমার সঙ্গে আচাৰ্য্যদেবের অন্যতম ছাত্র ও প্রিয় শিষ্য বোম্বাই প্রদেশস্থ তত্ত্বজ্ঞান-মন্দিরের (Institute of Philcsophy- ) arti : রাসবিহারী দাস মহাশয়ও ছিলেন। তিন জনের মধ্যেই কথাবাৰ্ত্ত হয়। আমরা মাঝে মাঝে দুই একটি প্রশ্ন করি এবং তদুত্তরে আচার্যাদেব অনেক কথা বলেন । অনেক বিষয়ে ঔংস্থক্য থাকিয়া গেলেও তাহার অস্থস্থতার জন্য অধিক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা সঙ্গত মনে হইল না । প্রথমতঃ কুশল মঙ্গল ও ব্যক্তিগত প্রশ্নোত্তরের পর আচার্যাদেব দর্শন ও রাষ্ট্রনীতির কথা উত্থাপন করিয়া বলেন যে দর্শনের ক্ষেত্র অতিব্যাপক। রাষ্ট্রনীতিও দর্শনেরই অন্ত ভূক্ত, সুতরাং উভয়ের মধ্যে কোনই বিরোধ নাই। রাষ্ট্রনীতি ক্ষুদ্র গণ্ডীতে আবদ্ধ, সুতরাং উহার দৃষ্টিও ক্ষুদ্র, সীমানিবদ্ধ। দর্শনের দৃষ্টি অখণ্ড, বিষয়-বিশেসের সীমায় উহা আবদ্ধ নয়। তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতার বিশেষ প্রয়োজন আছে। স্বাধীনতার আবেগে মানুষ ভুলভ্রাস্তি করিতে পারে। তবে স্বাধীনভাবে ভুল করার একটা মূল্য আছে। যেহেতু তাহাতে মানুষ স্বাধীনভাবে ভুল-সংশোধন করিবার শক্তিও অর্জন করিতে পারে। কিন্তু রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা যদিও অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, তথাপিটুহা জীবনের চরম লক্ষ্য নয়। ইহা চরম লক্ষ্যে পৌছিবার পক্ষে সহায়ক একটা উপায় মাত্র। স্বাধীনতা লাভ হইবে। কিন্তু স্বাধীন.