পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৩৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ve 88 নদ নদী আসিয়া মহাসাগরে মিলিত হয়। যাগযজ্ঞবহুল বৈদিকধৰ্ম্ম সাধারণের সহজগম্য ছিল না। ভারতীয় সাহিত্যের পুষ্টিসাধনোদ্দেশ্বে জনকয়েক বৈদিক দেবতা স্থলে ক্রমে ক্রমে তেত্রিশ কোটির আবির্ভাব হইতে লাগিল। অার একদিকে স্বল্পপ্রচার উপনিষদকে সুপরিচিত করিয়৷ তুলিল শঙ্করের বেদান্ত । এইরূপে এ যুগে ধৰ্ম্মশাস্ত্রের বিশেষ রূপেষ্ট সংস্কার এবং সংযোজনা হইল। মাহিষ্মতী নগরীর নব নালন্দায় দশসহস্র শিষ্যসহ প্রথম বৌদ্ধ নিরসনকারী ভট্টপাদ কুমারিল বেদাধ্যয়নে ও ভাস্থ্যবাৰ্ত্তিক রচনায় ব্যাপৃত। সারা ভারতেই তর্কবিতর্কের খরতর স্রোত প্রবাহিত। ফলে নবনবোন্মেষণী শক্তির বিকাশ পূর্ণতর হইয় উঠিতেছে। কোথাও সোহম কোথাও শিবোহমু এই ভাবধারায় মানুষ নিজের তুচ্ছতা এবং ক্ষুদ্রত ভুলিয় গেল ; অনেক নরদেবতার আবির্ভাব ঘটিল। শঙ্কর এবং শঙ্কর-শিষ্যগণের হস্তে বহু অতুলনীয় গ্রন্থমাল বিরচিত হইয়। ভারতসাহিত্য রত্নভাণ্ডারের গৌরববৰ্দ্ধন করিতে লাগিল । তারপর কত যুগ আসিল, যুগান্তর গত হইল। কালচক্র ঘুরিয়া গেল। ভারতের সৰ্ব্বনাশের দিন সমীপবৰ্ত্তী হইতে লাগিল। যে শক্তিমত্তার বলে দুৰ্দ্ধধ শক হুণ বিতাড়িত হইয়াছিল, সে শক্তি আর নাই । গেল কিসে?—অনৈক্যে । যে আভ্যন্তরিক তেজে বর্বর শক হ্রণ জাতি ভারতীয় সভ্যতায় অনুপ্রাণিত হইয়া বিশাল হিন্দুসমাজ-শরীরে অনুপ্রবিষ্ট হইয় তাহার বল বৃদ্ধি করিয়াছিল, সে তেজ সমাজের আজ কোথায় ? ব্রাহ্মণের ব্রহ্মতেজ, ক্ষত্রিমের ক্ষত্রিশক্তি, বৈশ্বের সেই পৃথিবী প্রতিযোগিতা, পূত্রের সেই নব নব শক্তি ও উদ্যম ক্ষীণ হইতে আরম্ভ করিয়াছে। বৈদেশিক শাসন আরম্ভ হইল। জাতীয় অধীনতার এই প্রারম্ভের যুগে উল্লেখযোগ্য এমন কোন সাহিত্য স্বাক্টর দেখা পাওয়া যায় না, যাহা লইয়া মন স্বতঃই গৰ্ব্বানুভব করিতে পারে। বহুধাবিভক্ত ভারতীয় সমাজ অন্তর্বিন্দ্রোহে তখন জর্জর ; বৈদেশিক আক্রমণে বিপন্ন, বিব্রত ; অনৈক্যে উদাসীন ; আদর্শ খৰ্ব্বাকৃত ; আশয় হীনতাগ্রস্ত। উন্নত সাহিত্যস্বাক্টর এসকল পারিপার্থিক অবস্থা নয়। এমন छूर्किटनब्र यककांब्र भाथांब बश्ब्रि बछ चिनिश फेटैिरङ SునOBO পারে না, ছোটখাট অনেক কিছু জন্মিতে পারে, বনস্পতির পাদমূলে লতাগুন্মের মত দু-দিন দশ দিন অবস্থিতি করে, কোনটায় ফুলও ফোটে, কচিৎ একটায় ফলও ফলে ; দু-একটা স্থায়ী হয়, বাকীগুলি শুকাইয়া শেষ হইয়া যায় । কালের সহিত আপোশ করিয়া বাচিয়া থাকার মত প্রাণশক্তি তাহাদের বড় বেশী থাকে না। তথাপি উৰ্ব্বরক্ষেত্রের গুণে অঘঃসিঞ্চিত বীজ হইতে দু-একটি কখন কখন হুয়ত বা ফলদানকারী মহীরুহ রূপ ধারণ করিয়৷ বসে ! পাঠান-যুগে এবং মোগল-যুগে সাহিত্যের ধারা পরিবর্তিত হইয়া গিয়াছিল দেখা যায়। মৌলিক রচনার শক্তি ক্ষয়প্রাপ্ত হইয়াছে অথবা হ্রাস পাইয়াছে ; তথাপি নিত্যপ্রয়োজনীয় সাহিত্যস্থষ্টির বিরাম নাই, যদিও উহা টীকাটিপ্পনী-নিবন্ধাদিতেই পৰ্য্যবসিত হইতেছিল। কালিদাস আর জন্মেন না, কিন্তু মল্লিনাথের উদ্ভব ঘটে। বিদ্বানের অভু্যদয় এদেশে স্বতঃসিদ্ধ, স্থানকাল সামান্য অনুকূল হইলেই সরস্বতীর বরপুত্ৰগণের আবির্ভাব হয়। বাচস্পতি মিশ্রের ষড়দর্শনের টীক, বিজ্ঞানভিক্ষুর সাংখ্যদর্শনের টাকা, মাধবাচার্ঘ্যের (সায়ণমাধবের) বেদ ও পূৰ্ব্বমীমাংস ব্যাখ্যা, আবার বিদ্যারণ্যস্বামীরূপে তাহারই বিখ্যাত বেদান্তগ্রহ পঞ্চদশী, মেধাতিথি ও কুল্লুকভট্টের মহটক, বিজ্ঞানেশ্বর এবং জীমূতবাহনকৃত বর্তমান হিন্দুআইনের মূলভিত্তি মিতাক্ষরা এবং দামভাগ এই সকল সময়েই বিরচিত হইয়া ভারতীয় সমাজ ও সাহিত্যের বহু কল্যাণ সাধন করিতেছে। বিজাতীয় অধীনতার ঘোর দুৰ্দ্দিনে জাতীয় অবনতির ভয়াবহ অবস্থা হইতে আত্মরক্ষার্থ তখন বিশেষভাবে ধৰ্ম্মব্যাখ্যার এবং চারিদিক দিয়া বাধন কষিবার প্রয়োজন ছিল, নতুবা জাতিভেদহীন বৌদ্ধাদির মতই কোটি কোটি নরনারী বিধৰ্ম্ম অবলম্বন করিয়া আজ হয়ত তাহদের সভ্যতা ও সাহিত্যকে প্রত্নতাত্ত্বিকের গবেষণার উপাদানমাত্র করিয়া রাথিত । কিন্তু ষে আভ্যন্তরিক আনন্দে ও উৎসাহে মানুষের স্বাধীনচিত্ত বিস্তৃতপক্ষ উৰ্দ্ধাকাশের পার্থীর মত কল্পনার অত্যুন্নত করলোকে ছটিয়া যায়, জীবনের পরিপূর্ণ রসলোক হইতে অজস্র অমৃত রস আহরণ করে, উদারতার উচ্চস্বরে মনের বীণা বাধিয়া লইয়া নিভ্যনূতন আনন্দের তান আপনি শোনে, পরকে শুনায়, নূতন স্বাক্টর নব নব উপাদান যোগান দেয়,