পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৪৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

●g SునD8O এবারকার লগুনযাত্রী ভারতীয়দের বিদেশ ভ্রমণ ভারতবর্ষকে স্বরাজের পথে একটুও অগ্রসর করিয়া দিবে না বলিয়াছি। কিন্তু কোন-না-কোন দল, শ্রেণী বা সম্প্রদায়ের স্বার্থ বেশী করিয়া সিদ্ধ হইতেও পারে। এরূপ স্বার্থসিদ্ধির মানে স্বরাজের বিন্ন উৎপাদন। হোয়াইট পেপারে, হিন্দুদের --বিশেষতঃ বঙ্গের হিন্দুদের, প্রতি ঘোর অবিচার হইয়াছে। ভারতবর্ষকে স্বরাজ না দিয়াও তাহার প্রতিকার করা যায়। কিন্তু সে প্রতিকারেরই বা আশা কতটুকু ? আবার ঐক্য-কনফারেন্সের প্রস্তাব মৌলানা শোকং আলী প্রস্তাব করিয়াছেন, যে, হিন্দু মুসলমান শিখ খ্ৰীষ্টিয়ান প্রভৃতির মধ্যে একতা স্থাপনের চেষ্টা পুনৰ্ব্বার করা হউক। একতা স্থাপন যদি প্রকৃত ও একমাত্র উদ্দেগু হয়, তাহা হইলে পুনৰ্ব্বার চেষ্টা করায় আমাদের কোন আপত্তি নাই। কিন্তু গত বারের অভিজ্ঞতা হইতে যাহা জানা গিয়াছে, তাহ মনে রাখা দরকার। বাংলা দেশের সকল প্রকার রাজনৈতিক মতের হিন্দু প্রতিনিধিদের যে কনফারেন্স বিড়ল-পার্কে হয়, তাহাতে তাহারা এই সৰ্ত্তে কতকগুলি প্রস্তাবে সম্মতি দিয়াছিলেন, যে, স্বরাজ-সংগ্রামে মুসলমান ও হিন্দু পরস্পরের সহায় ও সহকৰ্ম্মী হইবেন, মুসলমান ও হিন্দুদিগকে ব্যবস্থাপক সভায় আরও যে-কয়টি আসন দিতে হইবে, তাহ দিতে হইবে ইউরোপীয়দিগের আসন কমাইয়া, এবং ইউরোপীয়দের আসন কমাইবার চেষ্টা মুসলমান ও হিন্দুকে একযোগে করিতে হুইবে । কিন্তু এলাহাবাদের মিলন-বৈঠকে এই সৰ্বটি সম্পূর্ণ চাপা পড়িয়া গিয়াছিল। এলাহাবাদ মিলন-বৈঠকে হিন্দুর মুসলমানদের পক্ষে স্ববিধাজনক কোন কোন প্রস্তাবে কোন কোন সর্ভে রাজী হইয়াছিলেন—যেমন সিন্ধুদেশকে বোম্বাই প্রেসিডেন্সী হইতে পৃথক করিবার প্রস্তাব। তাহার ফলে ভারত-সচিব স্তর সামুয়েল হোর রাজনৈতিক নিলামের ডাক হাকিলেন—তিনি মুসলমানদিগকে উক্ত প্রস্তাবগুলি অপেক্ষা অধিক সুবিধা বিনাসর্বে দিলেন এবং তাহার দ্বারা বহুসংখ্যক মুসলমানের সমর্থন ও আনুগত্য বেশী করিয়া পাইলেন । এইরূপ রাজনৈতিক নিলামের ক্ষযোগ দেওয়া অবশ্ন মিলন কনফারেন্সের সকল পক্ষের উদ্দেশু ছিল না। কিন্তু কাৰ্য্যত যদি প্রস্তাবিত ভবিষ্কং কনফারেন্সে পুনৰ্ব্বার ভারতসচিবকে ঐরুপ সুযোগ দেওয়া হয়, তাহা কি বাঞ্ছনীয় হুইবে ? এরূপ স্বযোগ না-দিয়া মিলন-কনফারেন্স হইতে পারে কি-না, তাহাই বিবেচ্য। ভারতীয় রাষ্ট্রনীতি-ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িকতা পঞ্জাবের ডক্টর মোহাম্মদ আলম রাষ্ট্রনীতিক্ষেত্র হইতে সাম্প্রদায়িকতার বিষ দূর করিবার চেষ্টা করিতেছেন। সাম্প্রদায়িকতা দূর করিবার অকপট চেষ্টার সহিত আমাদের সম্পূর্ণ সহানুভূতি আছে। ডক্টর আলম তাহার একটি মতজ্ঞাপক পত্রে একটি তথ্যের ভুল করিয়াছেন বলিয়া আমাদের মনে হয়। তিনি বলিয়াছেন, ষোল-সতর বৎসর পূৰ্ব্বে হিন্দু-মুসলমানে মিলিয়া লঙ্কোঁতে যে প্যাক্ট বা চুক্তি করেন, তাহাই রাষ্ট্রনীতিক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িকতার সূত্রপাত। ইহা ভুল। স্বত্রপাত উহা নহে । যাহা মলী-মিণ্টে রিফমর্স (সংস্কার ) বলিয়া পরিচিত, তাহার প্রাক্কালে বড়লাট লর্ড মিণ্টে কোন কোন মুসলমান নেতাকে এই সঙ্কেত করেন, যে, তাহারা ব্যবস্থাপক সভায় স্বতন্ত্র প্রতিনিধিত্ব ও আসনের দাবি করুন । তদনুসারে আগ থানের নেতৃত্বে মুসলমান প্রতিনিধিবর্গ লর্ড মিন্টোর নিকট উপস্থিত হইয়া ঐরূপ দাবি জানান। পরলোকগত মৌলানা মোহাম্মদ আলী কংগ্রেসের কোকনদ অধিবেশনের সভাপতি রূপে নিজের অভিভাষণে এই ব্যাপারটিকে কম্যাও পাফর্ম্যান্স বা অনুজ্ঞাকৃত অভিনয় বলিয়াছিলেন ; অর্থাৎ আগা খান প্রমুখ নেতৃবর্গ বড়লাটের হুকুমে র্তাহার কাছে দরবার করিয়াছিলেন। বহরমপুরে বঙ্গীয় প্রাদেশিক কনফারেন্সের গত অধিবেশনে অভ্যর্থনা-সমিতির সভাপতি মৌলবী আবদুস সমদও আগা খানের ডেপুটেশুনের উৎপত্তির বর্ণনা ঐরূপ করিয়াছিলেন। ইহার মুদ্রিত অন্য প্রমাণও আছে। অন্যতম ভূতপূৰ্ব্ব ভারত-সচিব লর্ড মলী একজন প্রসিদ্ধ লেখক। র্তাহার আমলেই এই ব্যাপারটি ঘটে। তিনি এই ঘটনাটিকে লক্ষ্য করিয়া ১৯০৯ সালের ৬ই ডিসেম্বর বড়লাট লর্ড মিণ্টোকে লেখেন :– “December G.-I won't follow you again into our Mahometan dispute. Only I respectfully remind you