পাতা:প্রবাসী (ত্রয়স্ত্রিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/৮৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

qu-3 (কারণ উকীলবাবুর মাত্র বারো বছর প্রাক্ট হইয়াছিল) আমি চট্‌ করিয়া জবাব দিলাম, “না, চল্লিশখানা পড়েছেন। ভূ-খান এখনও পড়ার বাকী।” সমজদারের মত মাথা নাড়িা ইসমাইল আলী বলিয়াছিল, “তা হবে। 'ছকংবাবু (শরৎবাবু এখানকার বড় উকীল ) ‘বিয়াল্লিছ' থানাই পড়েছেন ত হ’লে। মোক্তার 'ছাবকে বাকী দু-খান তাড়াতাড়ি পড়ে । ফেলতে বলে।” এর পর হইতে উকীলবাবুর অপরিমে শক্তিমত্ত, অগাধ পাত্তিভ এবং স্বচ্যগ্র তীক্ষ্ণবুদ্ধির প্রতি ইসমাইল আলীর অখণ্ড বিশ্বাস জন্সিয়াছিল। গ্রামে ফিরিয়৷ পাড়া-প্রতিবেশীকে সে বুঝাইবার চেষ্টা করিত যে, হাকিমকে বক্তিম দিয়া বুঝাইতে তার উকীলের আর দ্বিতীয় নাই। ইসমাইল আলীকে হরেক রকম সলা-পরামর্শ দিতে দিতে উকীলবাবুর যে বিরক্তি ধরিত না তাহ নয়, কিন্তু ক্রমাগত মুখ বাকাইয়া মামলাগুনানীর দিন নিজে অনুপস্থিত থাকার সম্ভাবনা জানাইতেই যখন লুকানো কাছার খুঁট হইতে একটি একটি করিয়া রৌপ্য-মুদ্র বাহির হইতে থাকিত তখন ছিপি-খোলা কপূরের শিশির মত মন হইতে সব বিরক্তি উবিয়া গিয়া চোখে-মুখে চাপা হার্সি ছিটকাইয় পড়িত। প্রায় আড়াই বছর পূৰ্ব্বে ইসমাইল আলী নূরী বিবির উপর এক মামলা রুজু করে। উভয় পক্ষে বিবাদের বিষয় ছিল এতই হান্তকর যে, ইহা লইয়া আদালত অপেক্ষ গল্প কিংবা কবিতা লিখিয়া মাসিক সম্পাদকের দ্বারস্থ হওয়াই বাঞ্ছনীয় মনে হষ্টত। ঝগড়ার মূলে এক আমগাছ। তাতে আবার এমন ফলও ধরিত না যে ‘জৈষ্ঠের বড়ে আম কুড়াবার ধুম পড়িয়া ঘাইত। ইসমাইল আলীর সবজী বাগান এবং নুরী বিবির ধানক্ষেতের সীমানায় একটা খুব পুরাতন আমগাছ ছিল। একদিন ইহারই ডালপালার ছায়ায় বসিয়া উভয়ের পূর্বপুরুষ তামাক টানিতে টানিতে গল্প-গুজবে মাতিমা শ্রান্তি দূর করিতেন। কিন্তু একদিন নূরী বিবি গাছ হইতে সমস্ত আম পাড়িয় লয়। আর যায় কোথা ? ফলে যদিও নূরী বিবির ভাগে পূরামাত্রায় এক ঝুড়ি টােকে আম লাভ হয় নাই, কিন্তু সঙ্গে সঙ্গেই ইসমাইল আলী অনধিকারপ্রবেশ ও ক্ষতিপূরণের দাবি করিয়৷ দুই পৃষ্ঠা বাপিয়া উকীলের নোটিশ একখানা नृन्नैौ विविग्न निकै गांठेोहेइ cनछ।.

& эiіі ў ఏరి8ం সেই হইতে এই আমগাছ উপলক্ষ্য করিয়া উজ পক্ষে বহু মামলা-মোকদ্দমা গজাইয়া উঠিয়াছে। নোটিশজারির পর স্বত্ব, সীমানা, ব্যবহার স্বত্ব, জানালা-অবরোধ ইত্যাদির জন্য অনেক মামলা হইয়া গিয়াছে, কিন্তু সমস্তের মধ্যেই আমগাছটি একটি বিশিষ্ট স্বান জুড়িয়া বসিয়াছিল। বাস্তবিক পক্ষে, আমাদের নিকট ইসমাইল আলী ও আমগাছ এক অবিচ্ছেদ্য সত্তায় পরিণত হইয়া গিয়াছিল। ইসমাইল আলীকে আমগাছ হইতে পৃথক করিয়া দেখিবার ক্ষমতাই আমাদের সকলের লুপ্ত হইয়া পড়িয়াছিল। তাহাকে ঘরে ঢুকিতে দেখিলেই আমরা যেমন বলিতাম— “তারপর চৌধুরী সাহেব, আমগাছের খরর কি ?” (চৌধুরী বলিয়া ডাকিলে ইসমাইল আলীর আনন্দের সীমা থাকিত না । ) আমাদের উকীলবাবুও অমনি সাদা কাগজ টানিয়া লইয় তার উপর একটি লাইন আঁকিতে আঁকিতে বলিতেন, “ত হলে, এই হ’ল আমগাছ। তার এক হাত উত্তরে... ইত্যাদি।" ইসমাইল আলীও তখনই আমগাছের প্রতি লুব্ধ প্রতিবেশিনীর নিত্য-নূতন লালসার আনুপুৰ্ব্বিক ইতিহাস আওড়াইতে থাকিত। কোন-না-কোন পক্ষের হার-জিতে অন্য সব মোকদম কবে শেষ হইয়া গিয়াছে, কিন্তু চরথার স্বতার মত জামগাছের মামলা ক্রমশই টানিম্ন চলিল। এই মোকদ্দম। এমন অস্বাভাবিক দীর্ঘকাল ধরিয়া চলার কারণ কি বলিতে পারিব না। হয়ত বা দখলের প্রশ্ন হইতে স্বত্বের প্রশ্ন আসিয়া পড়িয়াছিল কিংবা মামলা টানিয়া লঙ্গা করিতে পারিলে উকীলেরই লাভ। কিন্তু ইসমাইল আলীর সঙ্গে দেখা হইলেই সে বলিত, “আমার আমগাছের মামলার কতদূর ?" “বেণী দেরি নয়। শুধু উকীলের তর্ক বাকী।” “ত যখনই শেষ হোক আপত্তি নেই। কিন্তু দেখবেন মুহুরীবাবু, বিবির যাতে খুব পয়সা খরচ হয়। এক মোকদম ঘেঁটেই চোখে সর্ষে ফুল দেখবে, আর কি ?” ইসমাইল আলী একাগ্রচিত্তে কামনা করিত, দুনিয়ার যতকিছু আপদ-বালাই নূরী বিবির মাথা ভাঙিয়া পড়ুক । সভই-বিপৰীক, অপুত্ৰক ইসমাইল আলীর মূল্যবান সম্পত্তি ভোগ করিবার সে ছাড়া আর বেই ছিল না। মায়বের সকল রকম স্বর্থ-স্বাচ্ছন্দাই নিরাপদে ভোগ করিবার স্বৰোগ