পাতা:প্রবাসী (ত্রয়োবিংশ ভাগ, প্রথম খণ্ড).djvu/২২৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SSt লোক যাতে তৃপ্ত ছিল, এখনকার লোক তাতে তৃপ্ত নয় । রসের স্বরূপ সব কালে এক থাকৃলেও, সেই রসম্বষ্টির জন্তে কত নূতন উপকরণ, কত নুতন' আয়োজনই না আমরা দেখছি-রীতির কত বৈচিত্র্য, কল্পনার কত বিভিন্ন তা ! প্রত্যেক কবি-ব্যক্তির বিশিষ্ট শক্তি-সাহিত্যে কত নৃতন রস রূপ, কত নব-নব আদশের কষ্টি করছে । সকল রূপ, সকল আদর্শকে মিলিয়ে নিয়ে রসের অখণ্ডত প্রমাণ করাই শক্তিমান সমালোচকের কাজ। প্রসাদগুণ বলে একটা বিশেষ গুণের কোনো মূল্যই নেই । খুব সহজ হবে, সাধারণের মুখবোধ্য হবে, সেইটেই রচনার একটা বড় গুণ–একথা বলা চলে না । তাই বলে’ সহজ হলে বা দুৰ্ব্বোধ না হ'লে, কবিতার গুণহানি হয় একথাও দাড়ায় না । ওয়ান্টার পেটার তার Style শীর্ষক অমূল্য প্রবন্ধের এক জায়গায় বলছেন, “The literary artist is of necessity a scholar. ...liis appeal again is to the scholar ... A scholar writing to the scholarly, will, of course, leave something to the willing intelligence of the reader... To really strenuous minds there is a pleasureable stimulus in the challenge for a continuous effort on their part, to be rewarded by a more intimate grasp of the author's sense.” 茜 যিনি সাহিত্যের সৃষ্টি করেন তিনি'ত নিজে পণ্ডিত । আবার পণ্ডিত সমাজের জন্যেই সাহিত্য । এর জন্যে লেখক সব কথাই নিজে না ব’লে বুদ্ধিমান পাঠকের খাতিরে কিছু কিছু বাদ রেখে যান । , কোনো লেখা বোঝবার জন্যে এই সে একটা চেষ্টার প্রয়োজন কেবলি হ'তে থাকে, তাতে সপ্রতিঙ পাঠকের মনে বেশ একটু ধাক লাগে ; আর এই চেষ্টার পুরস্কারস্বরূপ লেখকের মনোগত ভাবটি ভালো করে আষত্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একরকম আনন্দের উদ্রেক হয় । এ বিষযে উপস্থিত আমি আর বেশী কিছু বলব না। ভাষার অস্বচ্ছতার কথা ছাড়া, কবি ও কবিতার সম্বন্ধে আর-একট। গুরুতর দোষের কথা শোনা ধায় ; সেটা হচ্ছে প্রবাসী—জ্যৈষ্ঠ, ১৩৩৬ ২৩শ ভাগ, ১ম খণ্ড ഷൂസ്പേ প্রাণের অভাব, অর্থাৎ হৃদয়হীনতা, ভক্তিহীনতা 1. ‘প্রাণের অভাব' কথাটার একটা অর্থ হয় –কৃত্রিমতা ; কবির কল্পনা যদি নিজের না হয়, ধার-করা বা জোর-করা হয়, তবে সে কবিতা দুৰ্ব্বল ও বিশেষত্বহীন হয়, সে কবিতা পড়ে' কারো মনে কোনো ছাপ পড়ে না, রসোত্রেক হয় না । কিন্তু কবিতায় যদি কোনো শক্তির পরিচয় থাকে--তা সে যে শক্তিই হোক্, যদি তা পড়ে প্রাণে কোনো একটি বিশেষ ভাবের স্ফুরণ হয় —ত সে যে রকম ভাবই হোক, তাহলে সে কবিতার আদর্শ ও রুচি যাই হোক, সেট যে কৃত্রিম তা বলা যায় না। আসল কথাটা হচ্ছে এই, আধুনিক কাব্যকলায় কবিহীদয় নয়, কবিমানসটাই আলোচনা করবার জিনিষ–ভক্তি নয়, কবির শক্তিটাই আসল কথা। সৌন্দৰ্য্যস্থটিষ্ট কাব্যের মুখ্য উদ্দেশু, বিষয়ের জাতি-বিচার নেই--সেট। কুড়ানীর ব্যথাই হোক, আর ক্লিওপেট্রার হৃদয়হীন রূপষ্ট হোক। এমন কোনো বিষয় নেই, যা দিয়ে রসোদ্দীপন হয় না—কবির যে-শক্তির উপর সেটা নির্ভর করে, সাধারণ লৌকিক সুখদুঃখসংস্কারের অতীত হতে না পারলে, তা সম্ভব হয় না । কবির পক্ষে কোনে চরিত্র, কোনো বস্তু, কোনো বিষয়ষ্ট নিষিদ্ধ নয় । যে কল্পনার বলে কবি এগুলিকে কাব্যের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত করেন, সে কল্পনা—শুধু পরিচিত নয়— অপরিচিতেরও পরিচয় সাধন করে, অশ্লীলকে শ্লীল করে, জড়কে চিন্ময় করে, পাপকে রসবং করে তোলে । এ কাজ করতে হ'লে দেশ কাল ও পাত্রের সঙ্কীর্ণত র্তাকে অতিক্রম করতে হয়। এক দিকে র্তার যেমন ব্যক্তিত্ব থাকৃবে, তেমনি personal feelings ol offsors stolotte fog থাকবে না। একটা অ-সঙ্গত (aloofness ) না হ’লে, জগতের হাসি-কান্নার বাইরে দাড়াতে না পারলে, কাব্যহুষ্টির পক্ষে যা সবচেয়ে বড় জিনিস—সেই কল্পনার স্মৃত্তি হয় না। আগেই বলেছি, কাব্য জিনিষটা ‘লোকোত্তরচমৎকারপ্রাণ—উৎকৃষ্ট রচনার মধ্যে এই লক্ষণ থাকা চাই । কেবল হাসাতে কঁাদাতে পারা-মাতুষমাত্রেরই অতি-সুলভ অষ্টভতি উদ্রেক করাই কাব্যের সার্থকতা নয়, তাতে কবিকে popular বা জনপ্রিয় করে মাত্র। যিনি রসিক, বার'বাসন' আছে- অর্থাং, সেই culture ও taste আছে,